তৃণমূল নেতার পুত্রকে গুলি করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলেরই অপর গোষ্ঠীর এক জনের বিরুদ্ধে। —নিজস্ব চিত্র।
শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে জমি নিয়ে বিবাদের জেরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি কোচবিহারে দিনহাটার গীতালদহে। ঝামেলায় চলল গুলি। গুলিবিদ্ধ হলেন তৃণমূলের অঞ্চল কমিটির সাধারণ সম্পাদকের ছেলে রাজু হক। আহত হয়েছেন অন্য গোষ্ঠীর আর এক সমর্থক। দু’জনই গুরুতর জখম অবস্থায় দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। মারামারি, গুলি চলার ঘটনায় মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত দু’পক্ষের মোট ৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে তৃণমূলের অঞ্চল কমিটির সাধারণ সম্পাদক খলিল মিঞার ছেলে রাজু হকের সঙ্গে সদ্য তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত প্রাক্তন প্রধান আবুয়াল আজাদের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত জামশেদ আলির বচসা বাধে বলে অভিযোগ। ঝামেলা চলাকালীন আচমকা রাজুকে গুলি করেন জামশেদ। গুলি করে পালানোর সময় তৃণমূলের লোকজনই তাঁকে বেধড়ক মারধর করে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। অভিযুক্ত জামশেদের স্ত্রী সায়েরা বানুর দাবি, তাঁর স্বামী সম্পূর্ণ নির্দোষ। তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি মাফুজুর রহমানের লোকজন তাঁদের বাড়িতে গিয়ে বোমাবাজির পাশাপাশি, তাঁদের মারধর করা হয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন তিনি। সায়েরা বলেন, ‘‘আমার স্বামী ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেলে ওর পিছু ধাওয়া করে কয়েক জন। ওকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়।’’
এ নিয়ে বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা আবুয়াল আজাদের দাবি, ‘‘তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মাফুজুর রহমানের নেতৃত্বে কয়েক জন দুষ্কৃতী দিনদুপুরে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে চলেছে। তারই ফলস্বরূপ এই হিংসার ঘটনা।’’ যদিও মাফুজার রহমান বলেন, ‘‘জমি নিয়ে বিবাদের জেরে ওই ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। ওই ঘটনার সঙ্গে আমার এবং দলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ তাঁর সংযুক্তি, ‘‘কয়েক জন বিজেপির দালালি করে গীতালদহে অশান্তির চেষ্টা করছে। দলের নামে কুৎসা করার চেষ্টা করছে।’’
এই ঘটনা প্রসঙ্গে কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুমার সানি রাজ বলেন, ‘‘পুরনো বিবাদের জেরে দিনহাটার গীতালদহ এলাকায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। তাতে দু’রাউন্ড গুলি চলে। এতে রাজু হক নামে এক জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। আরও এক জন আহত হয়েছেন। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় পুলিশ ৮ জনকে আটক করেছে। সমস্ত ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।’’