পতাকা উত্তোলন করে কর্মশালা শুরু করলেন সোমেন। নিজস্ব চিত্র
মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও উত্তর দিনাজপুর— এই তিন জেলা কার্যত কংগ্রেসের ‘গড়’ হিসেবে পরিচিত। রবিবার এনআরসি, সিএএ নিয়ে দলীয় এক কর্মশালায় যোগ দিয়ে সেই ‘গড়ে’ সংগঠন দুর্বল হয়েছে বলে মন্তব্য করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। একইসঙ্গে তিনি জানান, আসন্ন পুরভোটে তৃণমূল, বিজেপিকে ঠেকাতে আসন সমঝোতা নয়, বামেদের সঙ্গে জোট চাই। এ দিন সোমেন বলেন, ‘‘গোটা দেশেই কংগ্রেসের সংগঠন দুর্বল হয়েছে। মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুরও বাদ যায়নি।’’
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির সুরেই সুর মিলিয়ে মালদহের সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস, বামেরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াই করায় জেলায় তৃণমূল খাতা খুলতে পারেনি। পুরভোটেও জোটবদ্ধ ভাবে লড়াই করলে তৃণমূল, বিজেপি জেলায় প্রভাব ফেলতে পারবে না।’’
এই প্রসঙ্গে মালদহের তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার বলেন, ‘‘ওই দু’টি দলই এখন ক্ষয়িষ্ণু শক্তি। ক্ষয়িষ্ণু দুই দল এখন একে অপরের উপরে ভর করেছে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডল বলেন, ‘‘কংগ্রেস তো সাইনবোর্ডে পরিণত হয়েছে।বামেরা অস্তিত্ব সঙ্কটে ধুঁকছে। তাই ওই দুই দল এক হয়েও কোনও লাভ করতে পারবে না।”
এ দিন মালদহের টাউন হলে দলীয় নেতা-কর্মীদের জন্য সিএএ, এনআরসি নিয়ে কর্মশালা করে কংগ্রেস। এ দিন দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টে পর্যন্ত চলে কর্মশালা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র, এ রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক গৌরব গগৈ, আবু হাসেম খান চৌধুরী। সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশে গিয়ে দলীয় কর্মীদের কাজ করার নির্দেশ দেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। একই সঙ্গে বাড়ি বাড়ি ঘুরে এনআরসি, সিএএ নিয়ে প্রচারের নির্দেশ দেন। মালদহের দুই পুরসভাতেও এনআরসি, সিএএ নিয়ে প্রচারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে দলের কর্মীদের একাংশ এনআরসি, সিএএ নিয়ে দেরিতে কর্মসূচি শুরু করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের দাবি, এনআরসি, সিএএ নিয়ে জেলায় লাগাতার আন্দোলন করেছে তৃণমূল। পাল্টা বিজেপিও রাস্তায় নামছে। এমন পরিস্থিতিতে জেলায় অনেকটাই পিছিয়ে কংগ্রেস।
এ বিষয়ে সোমেন বলেন, ‘‘দলের তরফে এনআরসি, সিএএ বিরোধী প্রচার, কর্মসূচি সর্বত্র চলছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘তৃণমূল নেতাদের পরামর্শ দিচ্ছেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। তিনি নাকি পুরভোটে পেশিবল প্রয়োগে নিষেধ করেছেন। এখন দেখার প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শ কত শুনবেন তৃণমূলের নেতারা।”