কলেজ চত্বরে উত্তেজনা। ছবি: সন্দীপ পাল।
কলেজের ছাত্র সংসদে ভোট নিয়ে উত্তেজনা চলছেই উত্তরবঙ্গে। বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে ঘিরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে জলপাইগুড়ি প্রসন্ন দেবী মহিলা কলেজে৷ কলেজের বাইরে টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠীর কর্মী সমর্থকরা তুমুল বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পুলিশের সঙ্গেও বচসা হয় তাঁদের। গোলমাল ঠেকাতে দু’পক্ষের ৭ জনকে আটক করে পুলিশ৷ দু’দিন আগে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে জখম হন যুব তৃণমূলের কর্মী শুভঙ্কর মিশ্র। তাঁর গলায় ধারালো অস্ত্রের কোপ পড়ে। এ দিন তাঁর গলায় অস্ত্রোপচার হয়৷ তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল।
মনোনয়নপত্র তোলার দিন থেকেই জলপাইগুড়ি শহরের তিন কলেজে টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠীর সংঘাতের সূত্রপাত৷ সংগঠনের জেলা সভাপতি অভিজিৎ সিংহ ও যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামী দু’পক্ষই প্রায় সমানে সমানে মনোনয়নপত্র তোলেন বলে দল সূত্রের খবর। এ দিন সকাল থেকেই পি ডি মহিলা কলেজের সামনে ভিড় বাড়তে থাকে৷ গোলমাল এড়াতে কলেজের ভিতরে ও বাইরে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়৷ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে জানান, কলেজের বৈধ পরিচয়পত্র না থাকার জন্যই ওই ৭ জনকে আটক করা হয়৷
টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি অভিজিৎ সিংহের অভিযোগ, ‘‘প্রকৃত টিএমসিপি-র প্রার্থীরা যাতে মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারে, সে জন্য সৈকত চট্টোপাধ্যায় এদিন পি ডি কলেজের সামনে বাইরে থেকে গুন্ডা বাহিনী দাঁড় করান। প্রশাসনের সহযোগিতায় শেষ পর্যন্ত প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দেন৷’’ সৈকতবাবুর পাল্টা দাবি, ‘‘কলেজ নির্বাচনটা ছাত্রদের লড়াই৷ এতে যুব তৃণমূলের কোনও ভূমিকা নেই৷ তাই টিএমসিপি-র জেলা সভাপতির ভিত্তিহীন অভিযোগকে আমি কোনও গুরুত্ব দিচ্ছি না৷’’ জলপাইগুড়ির মালবাজার পরিমল মিত্র স্মৃতি কলেজে অবশ্য বিনা নির্বাচনেই ছাত্র সংসদ গড়তে চলেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিনে ৪০টি আসনে শুধু তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রার্থীরাই মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। মোট ৩৭টি আসন বিশিষ্ট মালবাজার কলেজে ৩৫টি আসনে ৪০ জন মনোনয়ন দাখিল করেছেন। তবে বাণিজ্য শাখার সাম্মানিক স্নাতক স্তরের তৃতীয় বর্ষে একটি আসন থাকলেও সেখানে কোনও মনোনয়ন জমা পড়েনি। পাশাপাশি কলা বিভাগের প্রথম বর্ষের সাম্মানিক কোর্সে ৫টি আসনে ৪টি মনোনয়ন জমা পড়েছে। মালবাজার কলেজের অধ্যক্ষা উমা মাজি জানান সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ভাবেই মনোনয়ন দাখিল পর্ব মিটেছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে জানানো হয়েছে, অতিরিক্ত ৫ জনের নাম পরে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। আলিপুরদুয়ার জেলার ৯টি কলেজে আগামী ৩০ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচন হবে। আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত জেলাশাসক পাননাম বুলাম এস জানান, সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন সংগঠিত করাতে চলবে সিসি ক্যামেরায়।
এ দিন মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া নিয়ে কোচবিহার এবিএনশীল কলেজেও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। কলেজের সামনে দুই পক্ষ লোক জমায়েতের চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের হঠিয়ে দেয়। সংগঠনের কোচবিহার জেলা সভাপতি সাবির সাহা চৌধুরী বলেন, “রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত মেনেই আমাদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে। অন্য কেউ প্রার্থী দেওয়া হলে তা মানা হবে না।”