—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দিনভর নজর চলছে সীমান্তে। সন্ধ্যে নামতেই বিএসএফ জওয়ানদের গতিবিধি আরও বাড়ছে। ওয়াচ টাওয়ার থেকে কেউ ‘নাইট ভিশন’ ক্যামেরায় চোখ রাখছেন। আকাশে উড়ছে ড্রোন। সীমান্তের দূরত্ব হিসেবে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে জওয়ানদের সংখ্যাও। আর এই কড়াকড়িতে চোরাকারবারীদের ‘ত্রাহি রব’ উঠেছে। বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, চোরাচালান কার্যত বন্ধ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে। সীমান্ত পথে এখন আর গরু মজুত করে রাখার অভিযোগও তেমন নেই। চিনি, লবন পাচারের অভিযোগ কম। ও পার থেকেও ইলিশ মাছ বা কাটা কাপড় চোরা পথেএপারে চলে আসার অভিযোগ নেই বললেই চলে।
বাসিন্দাদের অনেকেই বলছেন, সারা বছর এমনই কড়াকড়ি রাখা উচিত সীমান্তে। তা হলে পাচার-অনুপ্রবেশ, কোনও বিষয়েই আর সমস্যা থাকবে না। বিএসএফের গুয়াহাটি ফ্রন্টিয়ারের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা সব সময় চোরা কারবারের বিরুদ্ধে অভিযান চালাই। এই সময়ে বাংলাদেশে অস্থিরতার জন্য সীমান্তে নজরদারি অনেকটা বাড়ানো হয়েছে। পাহারায় জওয়ানের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। তার কিছু সুফল মিলছে।’’
বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলায় প্রায় ৫০৯ কিলোমিটার বাংলাদেশ সীমান্ত। যার একটি অংশে কাঁটাতার নেই। দিনহাটার নাজিরহাট, গীতালদহ, সিতাই, শীতলখুচি, মেখলিগঞ্জ এবং তুফানগঞ্জের বালাভূতের মতো জায়গায় এখনও কাঁটাতার দেওয়া সম্ভব হয়নি। তার মধ্যে বেশ কিছু জায়গায় নদী-পথ রয়েছে। দিনহাটার গীতালদহে রয়েছে নদী-পথ। অভিযোগ রয়েছে, চোরাকারবারিরা বর্ষাকাল ও শীতকালে অতি সক্রিয় হয়ে ওঠে। শীতের সময়ে কুয়াশার আড়ালে জওয়ানদের বিভ্রান্ত করে চলে পাচার। আর বর্ষার ভরা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া গরু থেকে শুরু করে নানা জিনিসপত্র। যা জলে ভাসতে-ভাসতে বাংলাদেশে চলে যায়। সেখানে ওই জিনিসপত্রের অপেক্ষায় বসে থাকে বাংলাদেশের কারবারিরা। বাংলাদেশে অস্থিরতা শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগে দিনহাটার গীতালদহ, সিতাই সীমান্ত থেকে নদী-পথে পাচারের চেষ্টার সময় প্রচুর গরু আটক করে বিএসএফ। বাংলাদেশ থেকে চোরাপথে বেশ কিছু ইলিশ মাছও পৌঁছে যায় কোচবিহারে।
কিন্তু বাংলাদেশে অস্থিরতা শুরু হতে পরিস্থিতি পাল্টায়। বাংলাদেশের ঘটনার জেরে আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই সুযোগে হতে পারে অনুপ্রবেশ। জঙ্গি বা অপরাধীরাও ঢুকে পড়তে পারে। কারণ বাংলাদেশের বহু জেল থেকে অপরাধীরা পালিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। কয়েক দিন আগেই কোচবিহারের শীতলখুচি সীমান্ত এবং জলপাইগুড়ি সীমান্তে বাংলাদেশের বহু মানুষ জড়ো হয়ে ভারতে প্রবেশের অনুরোধ করে বলে দাবি। বিএসএফ অবশ্য তাঁদেরবুঝিয়ে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। এই অবস্থার মধ্যে কড়া নজর চলতে থাকবে বলে বিএসএফের তরফে জানানো হয়েছে।