দু’দলের আহত সমর্থকেরা। — নিজস্ব চিত্র
সপ্তাহ না ঘুরতেই ফের ছাত্র পরিষদ ও এসএফআইয়ের সঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মালদহের চাঁচল কলেজে। বুধবার দুপুর থেকে শুরু করে দফায় দফায় এই দুই ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে টিএমসিপি-র সংঘর্ষে আহত হয়েছে ছ’জন। তাঁদের মধ্যে দু’জনের মাথায় গুরুতর চোট লেগেছে। দু’জনকেই চাঁচল মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
১৪ জানুয়ারি এই কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন। গত বৃহস্পতিবার কলেজে ছাত্র প্রতিনিধিদের নিয়ে নির্বাচন সংক্রান্ত বৈঠক ডাকা হলেও জোটের সঙ্গে টিএমসিপি-র সংঘর্ষে তা ভেস্তে যায়। এ দিনও কলেজ কর্তৃপক্ষ জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন। সেখানে হাজির ছিলেন কলেজের প্রশাসকও। আর ভিতরে যখন কর্তৃপক্ষের ওই বৈঠক চলছে, তখন কলেজের বাইরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। পুলিশ তাদের কলেজ চত্বর থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরেও বাইরে দফায় দফায় সংঘর্ষ বেঁধে যায়। কোনও কারণ ছাড়াই নির্বাচনের আগে স্রেফ দাদাগিরি দেখানোকে কেন্দ্র করে দুই ছাত্র সংগঠন কলেজের বাইরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বলে অনেকেরই ধারণা। যদিও পড়ুয়াদের কাছ থেকে পরিচয় পত্র ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছিল বলে একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে।
কলেজ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কলেজে নির্বাচনের জন্য পরিচয়পত্র জরুরি। এ দিন ছিল পরিচয়পত্র দেওয়ার শেষ দিন। পরিচয়পত্র দেওয়ার সময়েই লাঠিসোঁটা, লোহার রড হাতে ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীদের তাণ্ডবে কলেজে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মাথা ফেটে যায় টিএমসিপি মাজেদ আলি, এসএফআইয়ের মোসাদ্দেক জামাল নামে দুই ছাত্রের। কলেজের প্রশাসক বিকাশ রায় বলেন, ‘‘কলেজের ভিতরে কিছু হয়নি। তবে এমন যাতে না হয় তা আমরা দেখছি।’’ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নুরুল ইসলামও বলেন, ‘‘কলেজের বাইরে যদি কেউ শক্তি প্রদর্শন করে তাহলে আমরা কী করতে পারি।’’
টিএমসিপি-র চাঁচল-১ ব্লক সভাপতি সুমিত সরকারের অভিযোগ, ‘‘আমাদের এক সমর্থকের পরিচয়পত্র কেড়ে নেওয়ার সময় বাধা দিতেই সিপি ও এসএফআইয়ের ছেলেরা আমাদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে।’’ এসএফআই ও ছাত্র পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অমিতেশ পাণ্ডে ও আনজারুল হক এক সঙ্গেই বলেন, ‘‘হার নিশ্চিত বুঝতে পেরে ওরা জেতার জন্য নানা ভাবে ষড়যন্ত্র করছে। পরিচয়পত্র কেড়ে নিচ্ছিল। বাধা দেওয়ায় লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে।’’
চাঁচলের এসডিপিও অভিষেক মজুমদার বলেন, পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে! দুপক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে!