অবৈধ: বেআইনিভাবে তৈরি হচ্ছে দোকান। বিধান মার্কেটে। নিজস্ব চিত্র
অবৈধ নির্মাণ এখনও ভাঙা হয়নি। অথচ পর্যটনমন্ত্রীর নাম করে তাঁকে ধন্যবাদ দিয়ে ফ্লেক্স টাঙানো শুরু হয়েছে শহরে। অভিযোগ উঠেছে, ওই ফ্লেক্সে ‘নাগরিকবৃন্দের’ কথা বলা হলেও সেগুলি টাঙাচ্ছেন আসলে মন্ত্রীর লোকেরাই। এই নিয়ে শুক্রবার মন্ত্রীকে কটাক্ষ করে মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, এ ভাবে হারানো জমি পুনরুদ্ধার করা যায় না। তাঁর দাবি, বিধান মার্কেটে অবৈধ নির্মাণ নিয়ে নান্টু পাল-পর্যটন মন্ত্রীর তরজা প্রকাশ্যেই চলছে। এখন সেটা দলের আভ্যন্তরীণ বিষয় বলতে পারেন না মন্ত্রী। অবৈধ নির্মাণ করে কিছু লোক কোটি কোটি টাকা লুটছে বলে তিনি প্রকাশ্যে জানিয়েছেন। তাই সব কিছু তাঁর মানুষের সামনেই জানানো উচিত।
যদিও মেয়রের বক্তব্য নিয়ে কিছু বলতে চাননি মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘যা বলার বিরোধী দলনেতা বলবেন। কেন না মেয়রের ‘লেভেল’ অনুযায়ী বিরোধী দলনেতা সেটা নিয়ে বলবেন। নান্টুর বিষয়টি দলেই আলোচনা হবে।’’ অবৈধ নির্মাণ ভেঙে এসজেডিএ-র তরফে দোকান তৈরি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাস দুয়েকের মধ্যে সেই কাজ হবে বলে মন্ত্রী জানিয়েওছেন। কিন্তু তা আদতে কবে হবে, তা নিয়ে অনেকেই সংশয়ে। কেন না, দোকানগুলো স্থায়ীভাবে তৈরি করে কারবার সাজাতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।
মেয়র বলেন, ‘‘আসল কাজ হল না। আর নাগরিকবৃন্দের নামে তাঁদের লোকজন ফ্লেক্স টাঙাচ্ছেন। এ ভাবে হারানো জমি উদ্ধার করতে পারবেন না মন্ত্রী।’’ বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকারের কথায়, মেয়র কী বললেন কিছু এসে যায় না। তিনি নিজে কিছু করতে পারেননি।
অবৈধ নির্মাণ নিয়ে ২৪ জুলাইয়ের পরে কনভেশন করার কথা জানিয়েছেন পর্যটনমন্ত্রী। নান্টু বলেন, ‘‘কনভেনশনে বলতে দিলে সমস্ত কথাই বলব। নাম করছি না, তবে সংবাদ মাধ্যমে খবর জেনে অনেকেই আমাকে ফোন করে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। তাঁরা পরামর্শ দিয়েছেন, আগের মতো যেন স্কুটিতেই ঘুরি। বলেছেন, আমার নিরাপত্তার অভাব হবে না।’’ সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘আমি চাই, অবৈধ নির্মাণ ভাঙা হোক। তবে সমস্ত অবৈধ নির্মাণের ক্ষেত্রেই একই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’
নান্টুকে সঙ্গে নিয়ে বিধান মার্কেট পরিদর্শনের সময় অবৈধ নির্মাণ নিয়ে কোটি কোটি টাকা কামানোর প্রসঙ্গ তুলে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন মন্ত্রী। এর পরে সাংবাদিক বৈঠক করে নান্টু দাবি করেন, তাঁর দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। তিনি জানান, ওই ঘটনায় তাদের আত্মসম্মানে লেগেছে। নান্টুর বক্তব্যকে ‘ঠাকুর ঘরে কে আমি কলা খাইনি’র সঙ্গে মন্ত্রী তুলনা করেন। প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন নান্টু। এরই মধ্যে মন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিয়ে ফ্লেক্স পড়েছে শহরে।