প্রতীকী চিত্র।
ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা শিলিগুড়ি পুর এলাকায় ১ হাজার ৮০০ জনের কাছাকাছি পৌঁছেছে। যা বিগত বছরগুলোতে শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের তুলনায় রেকর্ড। তার উপর ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ পার হতে চললেও ডেঙ্গিতে সংক্রমণ চলছেই। সেটাই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোগ প্রতিরোধে নতুন করে ভাবনা চিন্তা করতে শুরু করেছে পুরসভা, জেলা স্বাস্থ্য দফতরও।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১৭৭০ পেরিয়েছে। শহরের ৪, ২০, ৩০, ৩৩, ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী আসছে। সেই সঙ্গে ১-৫, ১৯, ২১, ৪২ নম্বরের মতো ওয়ার্ডগুলো সেখানে সংক্রমণ বেশি ছিল, সে সব জায়গা থেকেও দুই এক জনের ডেঙ্গি হচ্ছে। গত চার দিনে নতুন করে ২২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। খালপাড়া, কলেজপাড়া, সেবক রোডের নার্সিংহোমগুলোতে ডেঙ্গি নিয়ে অন্তত ১৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। অক্টোবর, নভেম্বর মাসের যে হারে রোগ সংক্রমণ ছড়াচ্ছিল সেই প্রকোপ কিছুটা কমলেও এখনও এ বছর ডেঙ্গির সংক্রমণ চলতে থাকার বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত চিকিৎসকদের অনেকে। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালেও ডেঙ্গি নিয়ে ভর্তি রয়েছেন এক জন। জ্বর নিয়ে আরও বেশ কিছু রোগী ভর্তি রয়েছেন। উপসর্গ দেখে তাঁদের ডেঙ্গি নির্ণয়ের পরীক্ষা করতে বলেছেন চিকিৎসক।
পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘ডেঙ্গি ৬০ শতাংশই কমে এসেছে। তবে ডিসেম্বরেও এ বছর রোগের প্রকোপ রয়েছে। আগামী জানুয়ারি থেকেই রোগ প্রতিরোধের কাজে শুরু করে দেওয়া হবে। ’’
এ বছর নির্বাচনের কারণে ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে। জুন মাস থেকে সেই কাজ শুরু হয়। চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য জুন-জুলাই থেকে রোগের প্রকোপ শুরু হয়ে যায়। আগে থেকে প্রতিরোধ ব্যবস্থা না-নিলে রোগ নিয়ন্ত্রণ করা খুব শক্ত। পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সে কারণে আগামী বছর জানুয়ারি থেকেই ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজে নামবেন পুর কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে তা নিয়ে একপ্রস্ত আলোচনাও করেছে তারা। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদকে মাথায় রেখে পাঁচ জনের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে পুর সচিব, এপিডেমলজিস্ট, পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং স্যানিটরি ইন্সপেক্টর। ডেঙ্গির জীবাণু বহনকারী এডিশ মশার ডিম থেকে যে নতুন মশা জন্মায় সেগুলোও ডেঙ্গির জীবাণু বহণ করে। আবার যে সমস্ত ডিম ফুটে মশা জন্মায়নি সেগুলো শুকনো অবস্থায় দুই বছর পড়ে থাকলেও নষ্ট হয় না। পরে জল পেলে এবং উপযুক্ত তাপমাত্রা পেলে ফের ডিম ফুটে নতুন মশা জন্মায়। সে কারণে কী ভাবে ডিম অবস্থাতেই সেগুলো নষ্ট দেওয়া যায় তা ভাবা হচ্ছে।