দূষণ: পথে বেরলেই ধোঁয়ায় জ্বলে চোখ। শিলিগুড়িতে। ফাইল চিত্র
ফের দূষণ শীর্ষে শিলিগুড়ি। মঙ্গলবার শিলিগুড়ির বাতাসের দূষণ পিছনে ফেলে দিয়েছে দেশের বাকি ৫৫টি শহরকে। জাতীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রকাশিত মঙ্গলবারের দূষণ তালিকায় শিলিগুড়ির দূষণ সূচক ছিল ৩৫৯। এ দিনের নিরিখে শিলিগুড়ির পরেই দেশের দ্বিতীয় দূষিত শহর আসানসোল। তৃতীয় আমদাবাদ। জাতীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আগাগোড়াই দেশের বাছাই করা শহরগুলির বায়ুদূষণের সূচক প্রকাশ করে। গত মাস থেকে শিলিগুড়িতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বাতাস পরীক্ষার পরিকাঠামো বসিয়েছে। তারপর থেকেই দেশের প্রথম পাঁচ দূষিত শহরের তালিকায় ঢুকে পড়েছে শিলিগুড়ি। গত দু’দিন ধরে সন্ধ্যের পরই শিলিগুড়ি ধোঁয়ায় ঢেকে যাচ্ছে। তা নিয়ে শহরবাসী যথেষ্ট আতঙ্কিত। এরই মাঝে দিনের বেলার বাতাসেও দূষণের বিষ মাত্রা ছাড়ানোয় বড় কোনও বিপদের আশঙ্কা গ্রাস করেছে পরিবেশপ্রেমীদের।
পরিবেশপ্রেমী সংগঠন ন্যাফের কোঅর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘এ ভাবে বেশি দিন চলতে পারে না। শহরের নদী থেকে বাতাস, সবই দূষণের কবলে চলে যাচ্ছে। এর পর এই শহর মানুষের বসবাসের যোগ্য থাকবে কিনা, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে যাবে।’’
জাতীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের রিপোর্টে শিলিগুড়ির সূচককে ‘অত্যন্ত খারাপ’ বলে উল্লেখ্য করা হয়েছে। বাতাসে দূষণের মাত্রা এই পর্যায়ে থাকলে ফুসফুসে সংক্রমণ এবং শ্বাসকষ্টের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গত রবিবার এবং সোমবার সন্ধ্যের পরে শিলিগুড়ি আকাশ ধোঁয়ায় ঢেকে যেতে দেখা যাচ্ছে। তা নিয়ে নানা জল্পনাও রয়েছে। তবে ধোঁয়ার সঙ্গে অবশ্য শিলিগুড়ি দূষণের তালিকায় শীর্ষে থাকার সরাসরি সম্পর্ক নেই বলে পরিবেশবিদরা মনে করছেন। কারণ, জাতীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ দিনের বেলায় দূষণের পরিমাপ করে থাকে।
মঙ্গলে শহরে দূষণের ধাক্কা
• প্রথম শিলিগুড়ি
• দ্বিতীয় আসানসোল
• তৃতীয় আমদাবাদ
* সূত্র: জাতীয় দূযণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ
শিলিগুড়ির একটি পরিবেশপ্রেমী সংস্থার কর্ণধার সুজিত রাহা বলেন, ‘‘শিলিগুড়িতে বেশ কিছু সময় ধরেই দূষণের মাত্রা বেশি। সকাল থেকে সন্ধ্যে অবধি রাস্তায় যানবাহনের গতি নেই। অথচ বেশির ভাগই ধোঁয়া ছাড়ছে। তাতে দূষণ তো বেড়ে যাওয়ারই কথা। রাতে আগুন, ধোঁয়া, চিকিৎসা-বর্জ্যের ধোঁয়া— সব মিলিয়ে ভয়াবহ অবস্থা হচ্ছে। এ ভাবে বেশি দিন চলতে পারে না।’’ শহরে যান চলাচল মসৃণ করে নিকাশির হাল না ফেরালে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে আসবে না বলে অনেকেই মনে করেন।