শিলিগুড়ি পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
শিলিগুড়ি শহর এবং লাগোয়া এলাকায় জমির বেআইনি কারবারিদের তালিকা তৈরি করছে পুলিশ। পুরনো মামলা, জমি সংক্রান্ত অভিযোগ, পুলিশের নথিতে নাম দেখে সে তালিকা তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে, সেবক রোড, দুই মাইল, শালুগাড়া, ইস্টার্ন বাইপাস, এনজেপি এবং ফুলবাড়ির মতো এলাকার অবৈধ কারবারিদের তালিকা হচ্ছে। ইতিমধ্যে, শিলিগুড়ি পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ও ‘স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ’ও (এসওজি) অভিযানে নেমেছে। প্রাথমিক ভাবে ‘এসওজি’ একটি তালিকা তৈরি করেছে। তাতে জনা পনেরোর নাম রয়েছে। এদের কয়েক জন রামকৃষ্ণ মিশন হামলার ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে। কয়েক জন শহরছাড়া রয়েছে।
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘বছর চারেক আগে, পুলিশের সক্রিয়তায় জমির বেআইনি ব্যবসা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছিল। আবার ঢিলেঢালা পরিস্থিতি এবং পুলিশ-নেতাদের একাংশের সঙ্গে ওঠাবসা থেকে এদের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে।’’ তিনি জানান, আপাতত একটি প্রাথমিক তালিকা রয়েছে। পর পর দেখে দেখে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, রামকৃষ্ণ মিশনের জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগে হইচই হতেই পুলিশ নড়েচড়ে বসে। খাস ‘নবান্ন’ থেকে গোটা পরিস্থিতি নজর রেখে প্রয়োজনীয় কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে, তা তদারক করা হয়েছে। সেখানে কমিশনারেটের কর্তাদের একাধিক বার্তা দেওয়া হয়েছে। ভোটের পরে, নতুন করে পুলিশি রদবদলে এই ঘটনার প্রভাব পড়তে পারে।
বাম আমল থেকে সেবক রোড, দুই মাইল, বাইপাস ঘিরে জমির অবৈধ কারবারিদের ‘রমরমা’ ছিল। বাম আমলে পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছিল, এলাকার এক জ়োনাল সম্পাদককে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নির্দেশে পুলিশ গ্রেফতার পর্যন্ত করেছিল। ২০১১ সালের পালাবদলের পর থেকে ধীরে ধীরে আবার কারবার শুরু হয়। ২০১৬ সালের পর থেকে জমির অবৈধ কারবারিদের ‘বাড়বাড়ন্ত’ চোখে পড়তে থাকে। বিভিন্ন জমিতে তাদের নজর পড়তে থাকে। বিশেষ করে, মালিক দুর্বল বুঝলেই তা হাতিয়ে নেওয়া বা জোর করে দখল করার অভিযোগ উঠতে থাকে। সম্প্রতি সেবক রোড এলাকা জুড়ে একটি তেমন দলের ‘বাড়বাড়ন্ত’ সামনে এসেছে।
সোমবার মিশনের ঘটনায় ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে আশ্রম থেকে খোয়া যাওয়া সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ধৃতদের ফের ১০ জুন জেলা আদালতে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন জলপাইগুড়ি আদালতের সহকারী সরকারি আইনজীবী মৃন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়।