এসআই রামদাস কুমার।
বেপরোয়া লরির ধাক্কায় মৃত্যু হল বৈষ্ণবনগর থানার এক এস আইয়ের। রবিবার গভীর রাতে এ ঘটনা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের টোল প্লাজা সংলগ্ন একটি পেট্রোল পাম্পের কাছে।
অভিযোগ, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে নাকা চেকিংয়ের সময় মালদহের দিকে থেকে আসা একটি লরি তাঁকে ধাক্কা মারে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত এস আইয়ের নাম রামদাস কুমার (৪১)। তিনি বৈষ্ণবনগর থাকায় কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি মালদহ জেলার রতুয়া ২ ব্লকের আড়াইডাঙা পঞ্চায়েতের ব্রাহ্মনপাড়ায়।
বাড়িতে তাঁর স্ত্রী মৌ কুমার ও নবম শ্রেণির পড়ুয়া মেয়ে রাজশ্রী এবং ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া ছেলে দেবরাজ রয়েছে। এই ঘটনায় জেলার পুলিশ মহলের পাশাপাশি আড়াইডাঙা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ঘাতক লরির কোনও হদিস পায়নি পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিবার জেলা থেকে পুজোর সময় পোস্টিং পেয়ে বৈষ্ণবনগর থানায় কাজে যোগ দেন রামদাসবাবু। ভালো ব্যবহারের জন্য সকলেরই মন জয় করে নিয়েছিলেন তিনি। রবিবার রাতে অন্যান্য পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে বৈষ্ণবনগরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের টোল প্লাজা থেকে প্রায় আড়াইশো মিটার দূরে নাকা চেকিংয়ে ডিউটি করছিলেন রামদাসবাবু। রাতে প্রচণ্ড কুয়াশা ছিল। রাত সওয়া দু’টো নাগাদ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে রাস্তার ওপারে গিয়েছিলেন। ফেরার সময় মালদহের দিক থেকে দ্রুত গতিতে আসা একটি লরি তাকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। অভিযোগ, লরিটি টোলপ্লাজার ব্যারিকেডও ভেঙে বেড়িয়ে যায়। টোলপ্লাজার কর্মীরা গাড়ি করে ফরাক্কা ব্যারাজ পর্যন্ত পিছু ধাওয়া করলেও সেই লরির কোনও হদিস পায়নি।
লরির ধাক্কায় রামদাসবাবু মারাত্মক জখম হন। সহকর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাঁকে কলকাতায় রেফার করা হয়েছিল। সেই রাতেই অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁকে কলকাতার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ বর্ধমানের রাস্তায় তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। পরে মৃতদেহ মালদহে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয় ময়নাতদন্তের জন্য। এদিন ভোরে দুর্ঘটনাস্থলে যান পুলিশের মালদহ রেঞ্জের ডিআইজি সুজিত সরকার, পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করা হয়েছে ঘাতক লরির খোঁজ চলছে।
এ দিন বিকেলে ময়নাতদন্তের পর মরদেহ মালদহ জেলা পুলিশ লাইনে নিয়ে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। পড়ে রাতে মৃতদেহ পৌঁছয় আড়াইডাঙার বাড়িতে। কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবারের লোকজন। রাতেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।