Rasikbil Mini Zoo

হরিণ, চিতাবাঘের জায়গা নিয়ে উদ্বেগ রসিকবিলে

তুফানগঞ্জ ২ ব্লকের প্রত্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে থাকা বিশাল জলাশয়, শীতের মরসুমে পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনার জেরেই মূলত পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ওই এলাকাকে সাজিয়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

Advertisement

অরিন্দম সাহা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:২৭
Share:

রসিকবিল চিড়িয়াখানায় হরিণ। —ফাইল চিত্র।

এনক্লোজ়ারের এলাকা বাড়েনি, বেড়েছে সেখানকার ‘আবাসিক’ হরিণ, চিতাবাঘের সংখ্যা। কোচবিহারের রসিকবিল মিনি জ়ু চত্বরের নির্দিষ্ট ঘেরাটোপে হরিণের সংখ্যা বৃদ্ধিতে সমস্যার আশঙ্কা নিয়ে চর্চা চলছে কর্মীদের একাংশেই। চিতাবাঘের সংখ্যাবৃদ্ধিও চিন্তা বাড়িয়েছে স্থান সংকুলানের। ওই বন্যপ্রাণীদের খাবারের খরচ, বাজেট নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে বনকর্তাদের।

Advertisement

কোচবিহারের অন্যতম পর্যটক আকর্ষণ রসিকবিল। তুফানগঞ্জ ২ ব্লকের প্রত্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে থাকা বিশাল জলাশয়, শীতের মরসুমে পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনার জেরেই মূলত পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ওই এলাকাকে সাজিয়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে গড়ে ওঠে রসিকবিল মিনি জ়ু। সেখানে প্রায় তিন হেক্টর এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা ঘেরাটোপে এক সময় হরিণের সংখ্যা ছিল ৮০টি। কয়েক বছর পরে সেখানেই তিন গুণ বেড়ে হরিণ হয়েছে ২৪৭টি। এক সময় এক, দু’টি চিতাবাঘ থাকা প্রায় এক হেক্টরের উদ্ধারকেন্দ্রে এখন ১১টি চিতাবাঘ রয়েছে। স্থানাভাব, নিজেদের মধ্যে গোলমালের আশঙ্কার মতো একাধিক কারণে সব চিতাবাঘ এক সঙ্গে খাঁচার বাইরে রাখা হচ্ছে না। যদিও বন দফতরের এক কর্তার দাবি, শাবকেরা বড় হলেই এক সঙ্গে থাকবে। প্রসঙ্গত, ওই জ়ু-তে সম্প্রতি একটি চিতাবাঘ শাবকের মৃত্যু হয়।

বনকর্তারা জানিয়েছেন, হরিণ-উদ্যানে নিমজুরি, গামার, পিটালি, শিমুল গাছ রয়েছে। গামার, পিটালি গাছের ফল খায় হরিণ। শিমুলের ফুল খায়। নিমজুরির পাতা মাটিতে পড়লেও, তাতে তারা মুখ দেয় না। বহেড়া, হরিতকি ফলও তাদের পছন্দের। সে সব গাছও কিছু সেখানে লাগানো হয়েছে। তবে এখনও তাতে ফলন হয়নি। ডিএফও জানান, শুকনো খাবার, ভুষি, কাঁঠাল, শাল-গামারের কিছু গাছের কচি পাতাও হরিণদের দেওয়া হয়। কাঁঠাল গাছের পাতা জোগাড় করা হয়।

Advertisement

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রসিকবিলে চিতাবাঘের জন্য ‘নাইট শেল্টার’ রয়েছে ছয়টি। তাই একটি ঘরে অনেক সময় দু’টি চিতাবাঘকে রাখতে হয়। তাই ‘নাইট শেল্টারের’ সংখ্যা বাড়ানো দরকার। কাঠের উপরে বিশ্রামের পরিকাঠামো একটি রয়েছে। তেমন কাঠামো আরও বাড়ানো দরকার। বনকর্তারা জানান, চিতাবাঘের জন্য বরাদ্দ ঠিকই রয়েছে। তবে হরিণের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সমস্যা হয়। মাঝেমধ্যে হরিণের মধ্যে খাবার দখল নিয়ে মারামারিও হয়।

ঘড়িয়ালের সংখ্যা, বিশেষ করে তাদের শাবকের সংখ্যাও কম নয়। সেখানে ৪৪টি ঘড়িয়াল শাবক রয়েছে। এ ছাড়া, নানা পশুপাখি রয়েছে। তাদের পরিচর্যায় কর্মীর সংখ্যা অপর্যাপ্ত বলে অভিযোগ রয়েছে। দফতরের এক কর্তা জানান, গত বছর সেখানকার ৩৭টি ঘড়িয়াল শাবককে দক্ষিণবঙ্গে গঙ্গা ও জলঙ্গি নদীতে ছাড়া হয়েছিল। এ বার কী করা হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। হরিণের সংখ্যা কমাতে অন্যত্র স্থানান্তরের ব্যাপারেও কিছু জটিলতা রয়েছে। পানীয় জলের সমস্যা, চিড়িয়াখানার ভিতরে শিশুদের খেলার পরিকাঠামোর অভাবের মতো অভিযোগও রয়েছে। চিতাবাঘ শাবকের মৃত্যুর পরে বেড়েছে সতর্কতাও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement