রায়গঞ্জে শান্তনু ঠাকুর। নিজস্ব চিত্র।
সিএএ চালু করার দাবিতে ফের সরব হলেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। রবিবারই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, এখনই সিএএ নিয়ে ভাবছে না কেন্দ্রীয় সরকার। আপাতত করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলা করাই মূল লক্ষ্য। একবার টিকা দেওয়া শুরু হলে পরিস্থিতি সামলানো যাবে। তারপর সিএএ প্রয়োগ নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করবে কেন্দ্রীয় সরকার। এর পর সোমবার শান্তুনু দাবি করলেন, অমিত মতুয়াদের সামনে এসে বলুন তাঁর বক্তব্য।
সোমবার সিএএ আইন দ্রুত লাগু করার দাবিতে রায়গঞ্জ রেল স্টেশন লাগোয়া ময়দানে উত্তর দিনাজপুর জেলা মতুয়া মহাসঙ্ঘের জনসভায় হাজির ছিলেন শান্তুনু। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, অমিত শাহ রবিবার মেদিনীপুরে যা বলেছেন সে কথায় তাঁরা থেমে থাকবেন না। তার দাবি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মতুয়াদের সামনে এসে বলুন তাঁর বক্তব্য৷ এর পাশাপাশি তিনি জানান, করোনা টিকা আসার পরে কেন্দ্রীয় সরকার সিএএ লাগু করবে৷ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘করোনা দেশের জন্য যতটা বড় সমস্যা, নাগরিকত্ব আইনও ততটাই গুরুত্বপূর্ণ।’’
প্রসঙ্গত কিছু দিন আগেই নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) প্রয়োগে বিলম্ব নিয়ে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন শান্তুনু। রাস উৎসবের সময় উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার ঠাকুরনগরে সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের নতুন কমিটি গঠন উপলক্ষে আয়োজিত সভায় নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগ নিয়ে মতুয়া সমাজের ‘হতাশা’ প্রকাশ করেন শান্তনু। এমনও বলেন যে, ‘‘নাগরিকত্বের জন্য কেন বার বার আমাদের ভিক্ষা চাইতে হচ্ছে? কেন বার বার আন্দোলন করতে হচ্ছে? কংগ্রেস, সিপিএম, তৃণমূল, বিজেপি— সকলের কাছে আমরা ভিক্ষা চেয়েছি। অধিকার কেউ দেবে না। অধিকার আদায় করে নিতে হবে।’’
আরও পড়ুন: অমিত-সফর শেষে বিতর্কিত পোস্ট, ‘অনুপম-কথায়’ নাহেজাল বিজেপি
আরও পড়ুন: ভুল করলে সুজাতা, আমি কি পাপী? স্ত্রী-র দলত্যাগে অশ্রুসজল সৌমিত্র
শান্তনুর ক্ষোভ তৈরির পিছনে বড় কারণ ছিল রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের একটি মন্তব্য। গোপালনগরে বিজেপির এক সভায় দিলীপ জানিয়েছিলেন, এক বছরের মধ্যে হিন্দু উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। তারই প্রেক্ষিতে শান্তুনু পরে বলেন, ‘‘কোনও এক নেতার কাছে শুনলাম, এক বছর পরে নাকি সোসাইটিতে নাগরিক আইন চালু হবে। এত দেরি হলে আমাদের আর তার দরকার নেই। পরবর্তীকালে এমনিই আমরা নাগরিকত্ব পাব।’’ একই সঙ্গে শান্তনু এমনও জানান, আগামিদিনে মতুয়া সমাজ কোনও সিদ্ধান্ত নিলে তিনি তার সঙ্গেই থাকবেন। মতুয়াদের সিদ্ধান্ত ছেড়ে রাজনীতির কথা ভাববেন না। বরাবর তৃণমূলের সঙ্গে থাকা মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষেরা গত লোকসভা নির্বাচনে দু’হাত উপুড় করে ভোট দিয়েছিলেন বিজেপি-কে। সেই মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি শান্তনুকে বোঝাতে অমিতের সফরের আগেই ঠাকুরনগরে যান রাজ্যে বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। শান্তনুর বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। জানা গিয়েছিলে, সেই বৈঠকে অনেকটাই নরম হয়েছেন শান্তনু। তবে সোমবারের মন্তব্যে তিনি বুঝিয়ে দিলেন সিএএ লাগু নিয়ে দলের বিলম্ব তিনি পুরোপুরি মেনে নিতে পারছেন না।