ফাইল চিত্র।
পেশায় তিনি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা। তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের রাজ্যস্তরের নেত্রীও। কিন্তু জেলার শিক্ষা মহলে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর ‘ঘনিষ্ঠ’ বা ‘স্নেহভাজন’ হিসাবে তাঁর পরিচিতিটাই জেলায় একটু বেশি। পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হতেই আলিপুরদুয়ারের ওই প্রাথমিক শিক্ষিকা এ বার চর্চায়।
সূত্রের খবর, বাম আমলে চাকরি পেয়েছিলেন ওই শিক্ষিকা। কিন্তু রাজ্যে পালাবদলের পরে তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ২০১৫ সালে দলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের সদস্য হন। তিন বছর পর ২০১৮ সালে সংগঠনের রাজ্যের পদ পান। আর তার পরই ধীরে ধীরে তিনি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ হয়ে ওঠেন বলে বিরোধীদের অভিযোগ। বিরোধী শিক্ষক সংগঠনের আলিপুরদুয়ারের এক নেতার কথায়, ওই শিক্ষিকার স্বামীও প্রাথমিক শিক্ষক। কিন্তু তাঁদের জীবনযাত্রা দেখলে বোঝার উপায় নেই। ইতিমধ্যেই তাঁদের বিদেশ ভ্রমণও হয়ে গিয়েছে বলে দাবি ওই নেতার।
গত শনিবার ইডির হাতে গ্রেফতার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গ্রেফতার করা হয় পার্থ-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও। তার পরই আলিপুরদুয়ারের এই শিক্ষিকাকে নিয়ে চর্চা চলছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। যেখানে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ছবি পোস্ট করে এমন দাবিও করা হচ্ছে, যে ছবিটি একুশের সমাবেশের মূল মঞ্চের। যে মঞ্চে অনেক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতাও ওঠার সুযোগ পাননি। কিন্তু ওই শিক্ষিকা মঞ্চে গিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছবি তুলে ফেলেছেন। বিরোধী শিক্ষক সংগঠনের অনেকে এমন অভিযোগও করছেন, ওই শিক্ষিকার প্রভাব এতটাই যে জেলার শিক্ষকদের বদলি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান তাঁর মুঠোয়। ওই শিক্ষিকার নিজের কথায়, “আমি কাউকে বদলির ব্যবস্থা করেছি, এমন একটা প্রমাণও কেউ দিতে পারবে না। তা ছাড়া, আমি যখন সংগঠনের দায়িত্ব পাই, তখন পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী। সেই সূত্রেই তাঁর সঙ্গে আমার রাজনৈতিক যোগাযোগ। আজ তিনি শিক্ষামন্ত্রী নন বলে যোগাযোগটা বন্ধ করে দিতে হবে?’’ তাঁর আরও বক্তব্য, একুশে জুলাই শুধু পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে নয়, আরও অনেকের সঙ্গে ছবি তোলেন। এবং সরকারি মাইনে থেকে সঞ্চয়ের অর্থেই বিদেশে গিয়েছিলেন তিনি। ওই শিক্ষিকাকে নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা শীর্ষ নেতারা।