বৃষ্টির প্রবল জলের স্রোতে সরে গিয়েছে মাটি, ধসে যাচ্ছে কালচিনির মালিবাড়ির একাধিক বাড়ি।
কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টির জেরে ধসে যেতে পারে আলিপুরদুয়ারের কালচিনির মালিবাড়ি এলাকার কয়েকটি বাড়ি। বাসিন্দাদের বক্তব্য, একনাগাড়ে বৃষ্টিতে জলমগ্ন এলাকা। সে জলের স্রোতেই ওই সব বাড়ির সামনের সড়ক ধসে যায়।স্রোতে সরে গিয়েছে বাড়ির নীচের মাটিও। যে কোনও সময় বাড়িগুলি ধসে যেতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি হেলে পড়েছে পিছনের দিকে থাকা আরও কয়েকটি বাড়ির দিকে। তা নিয়েও আশঙ্কা ছড়িয়েছে। বৃহষ্পতিবার সকাল থেকে এক এক করে ঘর খালি করতে শুরু করেছেন বাসিন্দারা। অভিযোগ, প্রশাসনের তরফে সাহায্য মেলেনি।
বাসিন্দারা জানান, প্রায় দেড়শো জন বর্তমানে ঘরছাড়া। তাঁরা বলেন, ‘‘আগে এত জল এলাকায় জমত না। বৃষ্টির জল যাতে বাগানে ঢুকতে না পারে, সে জন্য ডিমা চা বাগানের পাশে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। তাই বৃষ্টির জল আমাদের এলাকায় জমে।’’ এ দিন এলাকা পরিদর্শন করেন কালচিনির বিধায়ক বিশাল লামা। তিনি জানান, নিরাপদ জায়গায় বাসিন্দাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে কাজের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি পাঠানো হবে। ওই বাসিন্দাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি স্নিগ্ধা শৈব।
কয়েক দিন বৃষ্টি চলছে আলিপুরদুয়ার জেলা জুড়েই। ফলে, জেলার একাধিক জায়গায় নদীর জল কখনও বাড়ছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের শিসামারা নদীর জল সামান্য কমলেও, শালকুমারহাটে আতঙ্ক রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, জলের স্রোতে দিন কয়েক আগে শিসামারা নদীর বাঁধ ভেঙে গেলেও, এখনও নতুন করে তা গড়ে তোলার কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। আলিপুরদুয়ার জেলা সেচ দফতরের মুখ্য নির্বাহী বাস্তুকার অমরেশ সিংহ অবশ্য জানান, ওই এলাকায় বাঁধ সংস্কারের প্রাথমিক কাজের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবারও দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে কোচবিহারে। ফুঁসছে জেলার বিভিন্ন নদী। এক টানা বৃষ্টির পাশাপাশি দিনহাটার বিভিন্ন নদীতে জল বেড়ে বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। অভিযোগ, বুধবার রাতভর বৃষ্টি হওয়ায় দিনহাটার মাতালহাটের কয়েকটি গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়ে। গিতালদহের জারিধরলা ও দরিবস গ্রামে নদী-ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। একই ভাবে ক্ষতি হয়েছে বড় শৌলমারির মদনাকুড়া এলাকায়। সেখানেও কয়েকটি বাড়ি এবং বেশ কিছু জমি নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকেও ব্লক প্রশাসনের কাছে নদীতে বাঁধের দাবি জানানো হয়েছে। ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, নদীতে বাঁধের বিষয়টি সেচ দফতরকে জানানো হয়েছে। এ দিকে, বৃষ্টির জেরে ক্ষতিগ্রস্ত কোচবিহারের হেরিটেজ় রোড মেরামতের কাজ শুরু করেছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘ওই রাস্তায় সংস্কারের কাজ শুরু করা হয়েছে। তবে বৃষ্টির জন্য কাজের গতি কম হচ্ছে।’’ মন্ত্রী জানান, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর, সেচ দফতর, জেলাশাসকেরা সব জেলাতেই সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন। ‘নবান্ন’ থেকেও নজর রাখা হচ্ছে।