—ফাইল চিত্র।
নিউ জলপাইগুড়ি এলাকায় ৫৬ বছরের সেন্ট্রাল কলোনির দুর্গাপুজো, শহরে তো বটেই উত্তরবঙ্গের অন্যতম বড় বাজেটের পুজো বলে পরিচিত। কিন্তু এ বারে তা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তারই প্রতিবাদে সোমবার রেলের দফতরে বিক্ষোভ দেখালেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিলেন আরও ছ’টি ক্লাবের লোকজন। সাত পুজো কমিটি মিলে একটি মঞ্চ গড়ে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের এডিআরএম অফিসে বিক্ষোভ দেখান। স্মারকলিপিও জমা দেন। তবে রেলের তরফে জানানো হয়েছে, অনুমতি নিয়ে পুজো করতে অসুবিধা নেই। তাঁরা কেবলমাত্র পুজোর মাঠের পাশে রেল ইনস্টিটিউটের মধ্যে থাকা দখলদারী সরিয়ে নিতে বলেছেন মাত্র।
এলাকার সাতটি পুজো কমিটির সদস্যরা মিলে ইউনাইটেড সোসাল ওয়ালফেয়ার নামে একটি একটি যৌথ মঞ্চ তৈরি করেছেন। ফোরামের আহ্বায়ক জয়ন্ত দে বলেন, ‘‘আমাদের পুজো তুলে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। গেটবাজার-সহ রেলের পড়ে থাকা এলাকাগুলিতে বাজার এবং কিছু ব্যবসায়ীকে উচ্ছেদ করতে চাইছে।’’ এ দিন মাইক নিয়ে গেটবাজার থেকে মিছিল করে এডিআরএম অফিসে যান এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, সেন্ট্রাল কলোনি তো বটেই, এলাকার ছোটবড় আরও ৬টি ক্লাবকেও তুলে দিতে চাইছেন রেল কর্তৃপক্ষ। অবিলম্বে আলোচনার মাধ্যমে তা মেটাতে হবে।
এ দিন পাঁচ জনের একটি প্রতিনিধিদল দেখা করেন কাটিহার ডিভিশনের এডিআরএম পার্থপ্রতীম রায়ের সঙ্গেও। সেন্ট্রাল কলোনির সঙ্গেই কাশ্মীর কলোনি, নর্থ কলোনি, ডিএস কলোনি, সিস্টার কলোনি এবং ইউথ ক্লাবের সদস্যরাও লোকজন নিয়ে সামিল হন মিছিলে। এই ক্লাবগুলিও প্রায় ৪০ বছর ধরে পুজো করে আসছে এলাকায়। কাশ্মীর কলোনির পুজো আয়োজকদের মধ্যে নমিতা দে, ঝুমি সাহারা বলেন, ‘‘আমাদের ক্লাবে কম বাজেটে পুজো হয়। কিন্তু রেলের মাঠের জন্য প্রায় ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছিল। এ ভাবে করলে পুজো বন্ধ হয়ে যাবে।’’ এলাকার আরও এক বাসিন্দা তথা সেন্ট্রাল কলোনি ক্লাবের কর্মকর্তাদের একজন সৌরভ নাথ বলেন, ‘‘পুজো বন্ধ হলে এলাকায় সংস্কৃতি নষ্ট হবে।’’
রেলের তরফে অবশ্য দুর্গাপুজো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে এ রকম দাবি অস্বীকার করা হয়েছে। এডিআরএম পার্থপ্রতীমবাবু বলেন, ‘‘রেলের মাঠে অনুমতি নিয়ে প্রতি বছরই পুজো হয়, তাতে আমাদের আপত্তি রয়েছে— এই কথাটাই ভুল। আমরা কেবল রেল ইন্সটিটিউটে দখল হয়ে যাওয়া একটি ঘর খালি করে দিতে বলেছি।’’
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় রেলের জমি যেমন দখল হয়ে চলেছে, তেমনি দীর্ঘদিন থেকে রেল ইন্সটিটিউটের মাঠে মদ গাঁজার আসর বসছে। সেখানেই একটি ঘর দীর্ঘদিন থেকে দখল হয়েছে বলে অভিযোগ। সেন্ট্রাল কলোনির পুজো আয়োজকদের দাবি, ওই ঘরটিতে ক্লাবের পাওয়া বিভিন্ন ট্রফি রয়েছে। সেই ঘরটির চাবি রেল কর্তাদের কাছেই দেওয়া হয়েছে।