ফাইল চিত্র।
এ যে মুঠো মুঠো করে ধান এনে গোলা ভরানো! কৃষকদের থেকে ধান কেনার শিবির তো রয়েইছে। জলপাইগুড়ি জেলায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদেরও ধান কিনতে বলেছিল প্রশাসন। গোষ্ঠীর মহিলারা বাড়ি-বাড়ি গিয়ে ধানের খোঁজ করেন। ধান কিনে রাখার মতো পরিকাঠামো নেই। তাই বেশি করে ধান কিনতেও পারেননি গোষ্ঠীর মহিলারা। কৃষকদের ঘরে-ঘরে গিয়ে তাঁদের থেকে অল্প পরিমাণেই ধান কিনতে পেরেছেন।
কিন্তু বছরের শেষে তাঁদের কেনা ধানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০,৪৫৭ টন। এই পরিমাণ দেখে বিস্মিত জেলা প্রশাসনও। উত্তরবঙ্গের আর কোনও জেলায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের দিয়ে এত ধান কেনানো সম্ভব হয়নি বলেই দাবি জেলা প্রশাসনের।
সরকারি ধান কেনা নিয়ে জলপাইগুড়িতে এর আগে কম অভিযোগ ওঠেনি। খোদ তৃণমূলের বিধায়কই সরকারি বৈঠকে অভিযোগ জানিয়েছিলেন, ব্যবসায়ী এবং ফড়েরা ঢুকে পড়ে ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন। সাধারণ কৃষকেরা তাতে বঞ্চিত হচ্ছেন। কিছু জায়গায় চালকলগুলির বিরুদ্ধেও ব্যবসায়ীদের থেকে ধান কেনার অভিযোগ ওঠে। সে পরিস্থিতিতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের ধান কিনতেনামায় প্রশাসন। তাতেই হাতেনাতে ফল মিলেছে বলে দাবি।
জেলার ৩৯টি গোষ্ঠী এ ভাবে ধান কিনেছে। প্রায় সাড়ে ছ’হাজার কৃষকের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে ধান কিনেছেন মহিলারা। জেলা খাদ্য নিয়ামক রিনচেন শেরপা বলেন, “১০ হাজার টনেরও বেশি ধান গোষ্ঠীর মহিলারা কিনেছেন। এটা সত্যিই সাফল্যের। এই ধান সরাসরি কেনা হয়েছে। কোনও অভিযোগ তোলার সুযোগই নেই।” জেলা প্রশাসনের দাবি, চলতি বছরে আরও বেশি করে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের ধান কেনার কাজে যুক্ত করা হবে। জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, “এ বছরের সাফল্যকে ভবিষ্যতে অনুসরণ করব আমরা।”
গোষ্ঠীর মহিলাদের একাংশের দাবি, কাজটি মোটেই সহজ ছিল না। জলপাইগুড়ি সদরের একটি গোষ্ঠীর দলনেত্রী বলেন, “আমরা এলাকার বাড়ি-বাড়ি গিয়ে ধান কিনেছি। এমনও হয়েছে কারও থেকে হয়তো ১০ কেজি ধানও কিনেছি। একলপ্তে বেশি পরিমাণ ধান কিনতে পারিনি। কারণ, মজুত করার মতো ব্যবস্থা ছিল না। তাই অল্প ধান কিনে প্রতিদিন চালকলে দিয়েছি।” সে জন্য এক জন কৃষকের বাড়িতে বার বার যেতে হয়েছে। তবে তার জন্য কমিশনও পাচ্ছেন মহিলারা। কুইন্টাল প্রতি ৪১ টাকা করে। গোষ্ঠীর মহিলাদের রোজগারও হয়েছে।