Potato Farming

Potato Farming: মাঠ থেকে আলু তুলছে ‘ড্রপ-আউট’ দলবল 

মাথায় গামছা জড়িয়ে, হাফ প্যান্ট-গেঞ্জি পরে আলুর বস্তা তুলছিল ওরা। কেউ কেউ খালি গায়ে বস্তা টানছিল।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২২ ০৬:০০
Share:

স্কুলছুট: ক্লাসঘর ছেড়ে আলুর মাঠ দাপাচ্ছে ‘ড্রপআউট গ্যাং।’ শুক্রবার সকালে জলপাইগুড়িতে। ছবি: সন্দীপ পাল

ক্লাসঘর ছেড়ে আলুর মাঠ দাপাচ্ছে ‘ড্রপ-আউট গ্যাং।’ টপাটপ মাঠ থেকে আলুর বস্তা প্রথমে ট্র্যাক্টরে তার পরে বড় ট্রাকেও তুলে দিচ্ছে তারা। বিভিন্ন আলুর মাঠ থেকে ডাক আসছে তাদের। আলু চাষিরা বলেছেন, “ওদের বয়স কম, গায়ের জোর বেশি। কয়েকশো বস্তা নিমিষেই ট্রাকে তুলে দিচ্ছে।”

Advertisement

দশ জন তরুণের একটি দল। কেউ কলেজ ছুট, কেউ স্কুল ছুট। করোনার সময়ে টানা দুবছর স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকার সময়ে ওদের পড়াশোনাও বন্ধ হয়ে যায়। করোনা আবহ কাটিয়ে কিছু দিন আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি খুললেও ওরা কেউ আর ক্লাসরুমে ফিরে যায়নি। গ্যাং-এর নেতা অভিনারায়ণ বলছেন, “আমরা আর ছাত্র নেই, শ্রমিক হয়ে গিয়েছি।’’ নিজেরাই নিজেদের দলের নাম রেখেছে ‘ড্রপ-আউট গ্যাং।’ দেবনগরের বাসিন্দা একটি ছেলে স্কুলছুট। সে বলে, “আমরা তো সকলেই ড্রপ-আউট। কিছু দিন আগে বাড়ি বাড়ি এসে একটা সমীক্ষা হল। সেখানেও আমাদের ড্রপ-আউট বলেছিল। তাই একদিন গল্পে গল্পে ওই নামেই নিজেদের দলের নাম রেখেছি।”

আলুর মরসুমে টুকটাক রোজগারও হয়ে যাচ্ছে। খেত থেকে একটি বস্তা প্রথমে ট্র্যাক্টরে তার পরে বড় ট্রাকে তুলতে ১২ টাকা দেওয়া হয়। শুক্রবার সকালে জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া রাখালদেবী এলাকায় বড় ট্রাকে আলু তুলছিল ড্রপআউট গ্যাং-এর ছেলেরা। মোট পাঁচশো বস্তা তুলেছে এ দিন। হাতে পাবে ৬ হাজার টাকা। এক-একজন পাবে ছশো টাকা করে। দলের আরেক সদস্য জানাল, কোনও দিন দু’বেলা, এমনকি সন্ধ্যের পরেও ট্রাকে আলু তোলা চলে।

Advertisement

মাথায় গামছা জড়িয়ে, হাফ প্যান্ট-গেঞ্জি পরে আলুর বস্তা তুলছিল ওরা। কেউ কেউ খালি গায়ে বস্তা টানছিল। চৈত্র হলেও বৃষ্টি ভেজা বাতাস গায়ে বেঁধে। আলুর বস্তা টানা শরীর থেকে অবশ্য ঘামই ঝরছিল। জলপাইগুড়ি আনন্দচন্দ্র কলেজে কলা বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষ পর্যন্ত পড়ে ছেড়ে দিয়েছেন নয়াপাড়ার বাসিন্দা অভিনারায়ণ রায়। আর একটা বছর পড়ে পাশ করলেই সে স্নাতক হতে পারতেন। অভি বললেন, “কলেজ বন্ধ হওয়ার পরে বাড়িতেও পড়া হচ্ছিল না। বন্ধুরা মিলে কাজ করতে শুরু করলাম। টাকাও পেতে থাকলাম। অনেকে মিলেই ঠিক করে পড়া ছেড়ে দিয়েছি।”

আলুর মরসুমে এখন সকলে একসঙ্গে কাজে যায়। আলুর মাঠে স্কুল ছুট ‘ড্রপআউট গ্যাং’-এর কদরও অনেক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement