সঙ্গীতা কুণ্ডুর অন্তর্ধান রহস্যের তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে শিলিগুড়ি লাগোয়া শান্তিনগর। সঙ্গীতার পড়শি থেকে শুরু করে স্থানীয় একাধিক ক্লাবের সদস্যরা বলতে শুরু করেছেন, একজন কর্মরতা মহিলা তাঁর কর্মক্ষেত্র থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর প্রায় দুমাস কেটে গেল অথচ পুলিশ তাঁকে খুঁজে পাচ্ছে না, এটা মানা যায় না। তাঁরা অনেকেই জানান, এলাকা থাকে প্রতিদিনই প্রচুর মেয়ে, বধূ কর্মসূত্রে শিলিগুড়ি শহরে যান। কাজ সেরে তাঁরা যদি এ ভাবে বাড়ি না ফেরেন, তবে পরিবারের লোকজন তাঁদের কী ভাবে কাজে পাঠাতে ভরসা পাবেন সেই প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, পুলিশ যথাযথ তদন্ত করে এটা নিশ্চিত করুক যে, সঙ্গীতা নিজে থেকেই নিখোঁজ হয়েছে, নাকি তাঁকে অপহরণ করে কেউ কোথাও লুকিয়ে রেখেছে। তাঁরা জানিয়েছেন, আর কিছু দিন অপেক্ষার পরে শান্তিনগরের বাসিন্দারা গিয়ে প্রথমে ভক্তিনগর থানা ও পরে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট ঘেরাও করবেন।
সঙ্গীতার এখনও সন্ধান না মেলায় পরিবারের সকলে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছেন। মা অঞ্জলিদেবী বারেবারে সঙ্গীতার ছবি দেখছেন ও কাঁদছেন। অন্তর্ধানের বিষয়টি জানার পর সম্প্রতি অঞ্জলিদেবীর সঙ্গে দেখা করতে বাড়িতে যান তাঁর এক মামাতো ভাই দুলাল মণ্ডল। তিনিও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, ‘‘দুমাস কেটে গেল একটা মেয়ে নিখোঁজ। অথচ পুলিশকে অভিযোগ করা হলেও উদ্ধার করতে কেন, গড়িমসি করা হচ্ছে তা ভেবেই পাচ্ছি না।’’ শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা অবশ্য দাবি করেছেন,সঙ্গীতার হদিশ পেতে সবরকম চেষ্টা চলছে।
যে সংস্থায় কাজ করতেন, তার মালিকের সেবক রোডের অফিস লাগোয়া ফ্ল্যাট থেকে গত ১৭ অগস্ট সঙ্গীতা নিখোঁজ হয়ে যান। সংস্থার মালিক পরিমল সরকার দাবি করেছেন, ঘটনার দিন রাত ৯টার পর থেকে সঙ্গীতার আর খোঁজ মেলেনি। সঙ্গীতার এক পড়শি ক্ষিতীশ বণিক এদিন বলেন, ‘‘পাশের বাড়ির মেয়ে এ ভাবে কর্মক্ষেত্রে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যাবে, তা ভাবতেই পারছি না। আমাদের পরিবারের মেয়েরাও শহরে কাজে যায়। এই ঘটনার পর তাদেরও শহরে পাঠাতে ভয় হচ্ছে। ঘটনার দু’মাস কেটে গেলেও পুলিশ কেন এখনও রহস্যের কিনারা করতে পারছে না, তা ভেবেই পাচ্ছি না।’’ শান্তিনগর এলাকার একটি ক্লাবের কয়েকজন সদস্য জানান, তাঁরা শীঘ্রই পাড়ার বাসিন্দাদের নিয়ে গিয়ে ভক্তিনগর থানা ও পুলিশ কমিশনারেটের সদর দফতর ঘেরাও করবেন।