অরবিন্দের বাড়িতে মেয়র। নিজস্ব চিত্র।
ইউক্রেনে ভারতীয় দূতাবাস থেকে সাহায্য মেলেনি। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সেই দেশ থেকে ফেরার জন্য কোনও একটা ব্যবস্থা করতে বারবার সেখানকার ভারতীয় দূতাবাসে ফোন করছিলেন শিলিগুড়ির অরবিন্দ ছেত্রী এবং তাঁর সহপাঠীরা। কেউ ফোন ধরছিলেন না বলে তাঁদের বক্তব্য। এই পরিস্থিতিতে চরম বিপাকে পড়ে যান তাঁরা।
বুধবার সকালে ফোনে শিলিগুড়ির খড়িবাড়ির পানিট্যাঙ্কির বাড়িতে মা জ্যোতি ছেত্রীকে সেটাই বলছিলেন অরবিন্দ। তার কয়েক ঘণ্টা আগে তাঁরা ইউক্রেন থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে পোল্যান্ডে নিরাপদে পৌঁছেছেন। বলছিলেন ওই পরিস্থিতির মধ্যে নিজেদের বাঁচানোর রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতির কথা। খবর আসছে, কাছেই কোথাও বিস্ফোরণ হয়েছে। কখন কী হয় কেউ বুঝতে পারছেন না।
ওঁরা সকলেই ইউক্রেনের লভিভে ন্যাশনাল মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির পড়ুয়া। শিলিগুড়ি থেকে যাঁরা ইউক্রেনে পড়তে গিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে কয়েকজন ফিরতে পারলেও অনেকেই এখনও ফেরেননি। জ্যোতি ছেত্রী এবং তাঁর স্বামী শ্যামকুমার ছেত্রীর মতো ওই পড়ুয়াদের অভিভাবকেরাও উদ্বিগ্ন। ছেলেমেয়েদের না ফেরানো পর্যন্ত তাঁদের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে। ছেলের সঙ্গে ফোনে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে যে কথা হয়েছে তা জ্যোতি বলছিলেন। তাঁর দাবি, ওই মেডিক্যাল কলেজে পড়ুয়ারা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে যান। সঙ্গে জল ফুরিয়ে এসেছে। যেটুকু রয়েছে কখনও এক ঢোঁকের বেশি কেউ খাচ্ছেনও না। যদি ফুরিয়ে যায়, সেই ভয়ে।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি তাঁরা বাসে এবং কিছুটা হেঁটে পোল্যান্ডের সীমানায় যেতে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ইউক্রেন পুলিশ তাঁদের মাঝপথে আটকে দেয়। ফলে ফের ফিরে যেতে হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই। ফের নতুন করে পরিকল্পনা করতে থাকেন তাঁরা। সকলে মিলে টাকা দিয়ে বাসের ব্যবস্থা করেন। তাতে করেই ভারতীয় সময় মঙ্গলবার রাতে পোল্যান্ড পৌঁছতে পেরেছেন।
এ দিন খড়িবাড়িতে তাঁদের বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। রাজ্য সরকারের পক্ষে সহযেগিতার আশ্বাস দেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় পুলিশ এবং ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা বাড়িতে গিয়ে বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে এসেছেন। ওই ছাত্রের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য নাম। ঠিকানা, ফোন, ইমেল সমস্ত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।