—প্রতীকী চিত্র।
যে চা বলয় এবং আদিবাসী ভোট পেয়ে উত্তরবঙ্গের উত্তর প্রান্তে জমি শক্ত করেছিল বিজেপি, সে জমিতেই এ বার লোকসভা ভোটে ধস নেমেছে। সে জন্য দায়ী বিজেপি নেতারাই, বলছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)। কোন এলাকায়, কত শতাংশ ভোট পড়েছে, কোন বুথে, কোন দল, কত ভোট পেয়েছে, তার বিশদ বিশ্লেষণ এতদিন ধরে করেছে সঙ্ঘ। সে বিশ্লেষণের পরে সঙ্ঘের এক কার্যকর্তার কথায়, “ফলাফল মোটেই ভাল নয়। চা বলয় এবং আদিবাসীরা বিজেপির থেকে মুখ ফেরাতে শুরু করেছেন। এই প্রবণতা বজায় থাকলে, তা চরম আকার ধারণ করবে আগামী বিধানসভায়। বিজেপি নেতাদের স্থানীয় স্তরে নজর দিতে হবে।”
কোচবিহার তো বটেই, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ির ভোটের ফল নিয়েও সঙ্ঘ সন্তুষ্ট নয়। বিশেষত, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ির চা বলয়ের ফলের জন্য সরাসরি বিজেপির উপরে দোষ চাপিয়েছে সঙ্ঘ। সঙ্ঘের দাবি, বেশিরভাগ চা বাগানেই বিজেপির ভোট কমেছে। কেন ভোট কমেছে তার কয়েকটি কারণ বিজেপিকে জানিয়েছে সঙ্ঘ। প্রথমত, সারা বছর চা শ্রমিকদের কোনও দাবি নিয়েই বিজেপি নেতারা কোনও আন্দোলন করেনি। সে ন্যূনতম মজুরি প্রণয়ন হোক বা কোনও বাগানের জলকষ্ট, শ্রমিক ছাঁটাই রোধের মতো দাবিতে বিজেপি নেতাদের চা বাগানে আন্দোলন-প্রতিবাদে দেখা যায়নি। দ্বিতীয়ত, বিজেপির পদাধিকারীদের একটা বড় অংশের সঙ্গে চা বাগানের কর্মীদের যোগাযোগ সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে পড়েছিল, ভোটের আগে ছাড়া যোগাযোগই ছিল না। তৃতীয়ত, চা শ্রমিক লাইনে বিজেপি নেতাদের অনেকেরই পা পড়েনি। চতুর্থত, আদিবাসীদের নিয়ে বিজেপির কোনও সংগঠনই তৈরি হয়নি। পঞ্চম, ২০১৯ সালের লোকসভা এবং গত বিধানসভায় চা বলয়ে যে ভোট বিজেপি পেয়েছে, তা যে কেবল ব্যক্তিকেন্দ্রিক ছিল, এই বিষয়টি দল উপলব্ধি করতে পারেনি।
সঙ্ঘের কার্যকর্তার কথায়, “বিজেপি নিজের দোষে ভোট হারিয়েছে। আগামী সপ্তাহে বিজেপি নেতাদের এবং শ্রমিক নেতাদের সমন্বয় বৈঠকে ডাকা হয়েছে।” সঙ্ঘের সুপারিশ, দ্রুত চা বলয়ে এবং আদিবাসী সমাজে নতুন মুখকে দায়িত্ব দিতে হবে। না হলে, ওই এলাকায় দলের সংগঠন নড়বড়ে হতেই থাকবে। বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী সঙ্ঘের বিশ্লেষণ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, “মোটের উপরে, জলপাইগুড়ির চা বলয়ে আগের বারের ফল ধরে রাখা গিয়েছে। বানারহাটে আমরা উপনির্বাচনের থেকে ভাল ফল করেছি।
মালবাজারের দিকে ভোট কমেছে, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”