রাজকীয়: এই বাঘ দেখতেই ভিড় জমে বেঙ্গল সাফারিতে। নিজস্ব চিত্র
উত্তরবঙ্গের বাসিন্দা ও পর্যটক মহলের জন্য সুখবর। বড়দিনের আগেই বেঙ্গল সাফারির শিলা ও স্নেহাশিসের পরিবারে নতুন সদস্য হিসাবে আসতে চলেছে আরেকটি পূর্ন বয়স্ক ‘রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার’। জামশেদপুরের টাটা চিড়িয়াখানা থেকে একটি পুরুষ রয়্যাল বেঙ্গলটি সপ্তাহ দু’য়েকের মধ্যে শিলিগুড়ি এসে পৌঁছবে। এর পরে দিন দশেক নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিলেই ৩ বছর বয়সী বাঘটিকে ছাড়া হবে টাইগার সাফারির জন্য নির্দিষ্ট জঙ্গলে।
নতুন বাঘটি চলে এলে বেঙ্গল সাফারিতে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা দাঁড়াবে ৩টি। দু’টি পুরষ এবং একটি মহিলা।
বন দফতর সূত্রের খবর, জামশেদপুরের চিড়িয়াখানাটিতে ৫টি পূর্ন বয়স্ক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার রয়েছে। একটি সাদা রয়্যাল বেঙ্গলও রয়েছে। সম্প্রতি সেখানকার একটি বাঘ ৩টি সন্তান প্রসব করেছে। এর পরেই পুরনো একটি বাঘ বেঙ্গল সাফারিকে দেওয়া হবে বলে চূড়ান্ত হয়।
গত সপ্তাহেই বেঙ্গল সাফারির অফিসারেরা জামশেদপুরে গিয়েছিলেন। সেখানে রয়্যাল বেঙ্গলটিকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে ছটফটে স্বভাবের জন্য তাকে সবার পছন্দ হয়। আলোচনার পর সেটিকে শিলিগুড়ি় পাঠানোর চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে। এ ছাড়াও জামশেদপুর থেকে সম্বর, হগ ডিয়ারও প্রজাতির হরিণও বেঙ্গল সাফারিতে আসছে। রবিবার সাফারির একদল কর্মী জামশেদপুরের উদ্দেশ্যে রওনাও হয়ে গিয়েছেন।
বেঙ্গল সাফারির ডাইরেক্টর অরুণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখন সাফারির অন্যতম আকর্ষণ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। ধীরে ধীরে এর সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে সরকারি সিদ্ধান্ত হয়েছে। জামশেদপুরের চিড়িয়াখানা থেকে নতুন বাঘটি আসছে। পরিবেশ, পরিস্থিতিতে খাপ খেলেও তাকে সাফারিতে ছাড়া হবে।’’
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মুখ্যমন্ত্রী সাফারিতে ‘টাইগার সাফারির’ সূচনা করেন। ওড়িশার নন্দনকাননের দু’টি বাঘ কলকাতা চিড়িয়াখানা হয়ে শিলিগুড়ি আসে। শীলা ও স্নেহাশিস নামের রয়্যাল বেঙ্গল দু’টিকে আনার ১৫ দিন পর সাফারিতে ছাড়া হয়। সকাল ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা অবধি অন্য সাফারির সঙ্গে টাইগার সাফারিও চালু থাকে। ২০ হেক্টর স্বাভাবিক জঙ্গলে ছড়িয়ে থাকা ‘টাইগার সাফারি’ এলাকায় ২০ মিনিটের সাফারির জন্য ৫০ টাকা নেওয়া হয়। ছুটির দিনগুলিতে কচিকাঁচারা বাঘ দেখার জন্য সকাল থেকেই অভিভাবকদের সঙ্গে লাইন দেয়।
সাফারির অফিসার, কর্মীরা জানান, আপাতত মোট ৬টি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার সাফারিতে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। কলকাতা, জামশেদপুর, নন্দনকানন বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। নতুন বাঘটি আসতেই কয়েকদিন তাকে চিকিৎসকদের নজরদারিতে রাখা হবে।
এখন স্নেহাশিস ও শীলা প্রতিদিন সন্ধ্যায় ১৬ কেজি করে মাংস খায়। তার সঙ্গে তাদের ভিটামিন-এ ও কালিসিয়াম দেওয়া হয়। নতুন বাঘটিতে আসার পর তার গতিবিধি দেখে ধাপে ধাপে খাবার বাড়িয়ে একই করা হবে। বাঘটির জন্য আলাদা সাময়িক ‘এনক্লোজার’, ২ জন কর্মীকে তৈরি রাখা হয়েছে। ট্রাকে খাঁচায় ভরে জামশেদপুর থেকে শিলিগুড়িতে আনতে ২৪ ঘন্টা সময় লাগবে।