তৃণমূল এবং বিজেপির লোকজনের উপস্থিতিতে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয় গঙ্গারামপুর বিডিও অফিসে। —নিজস্ব চিত্র।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় শাসকদলের কোনও ‘বাধা’ না থাকা সত্ত্বেও কেন বিরোধীরা সব আসনে প্রার্থী দিতে পারেননি, তা নিয়ে কটাক্ষ ছুড়েছিল তৃণমূলই। সোমবার সেই জেলাতেই জোর করে বিজেপি প্রার্থীকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করানোর অভিযোগে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, ভয় দেখিয়ে তাদের প্রার্থীকে পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়াতে দিচ্ছে না তৃণমূল। শাসকদল অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সোমবার গঙ্গারামপুর বিডিও অফিসে বিজেপির পঞ্চায়েত স্তরের এক প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহারকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিজেপির অভিযোগ, তাদের এক পঞ্চায়েত প্রার্থীকে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীসমর্থকরা বিডিও অফিসে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁর মনোনয়ন প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। খবর সেখানে পৌঁছোয় বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁরা বাধা দিলে শুরু হয় গন্ডগোল। স্থানীয় সূত্রে খবর, বিডিও অফিসেই হাতাহাতিতে জড়ান দুই দলের কর্মী-সমর্থকেরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ বাহিনী।
দীনবন্ধু সরকার নামে ৭ নম্বর বুথের নন্দনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপি প্রার্থী অবশ্য শেষ পর্যন্ত তাঁর মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন বলে খবর। তবে তাঁকে শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করা হয়েছে, এই মর্মে গঙ্গারামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার তদন্ত চলছে।
মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় গোটা দক্ষিণ দিনাজপুরে তেমন কোনও গন্ডগোলের খবর পাওয়া যায়নি। নির্বিঘ্নেই শাসক-বিরোধী, সমস্ত রাজনৈতিক দল তাদের মনোনয়ন জমা করে। কিন্তু মনোনয়ন তুলে নেওয়ার জন্য বিরোধী প্রার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাপ দিচ্ছে তৃণমূল, এমন অভিযোগ আগেও করেছেন বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী। সোমবারের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘গঙ্গারামপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে হরিরামপুর এবং কুমারগঞ্জের বিভিন্ন প্রান্তে বিজেপির প্রার্থীদের ভয় দেখানো হচ্ছে। ভাঙচুর করা হয়েছে বাড়িঘর। গঙ্গারামপুরে জোর করে তাঁদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের চাপ দেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, দীনবন্ধুকেও একই রকম ভাবে গঙ্গারামপুর বিডিও অফিসে নিয়ে গিয়ে তাঁর ইচ্ছের বিরুদ্ধে মনোনয়ন প্রত্যাহার করানো হয়। অন্য দিকে, তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃণাল সরকারের দাবি, ‘‘দীনবন্ধু সরকারকে ভুল বুঝিয়ে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। তিনি নন্দনপুর এলাকায় তৃণমূলের এক সক্রিয় কর্মীর আত্মীয়। মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন। তাই স্বেচ্ছায় নিজের প্রার্থিপদ প্রত্যাহার করতে চান। কিন্তু বিজেপি কর্মীরা দীনবন্ধুকে বাইকে করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আমাদের লোকজন বাধা দিলে হাতাহাতি শুরু হয়।’’ এ নিয়ে দীনবন্ধু নিজে কী বলছেন? আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘স্বেচ্ছায় মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছি। আর কিছু বলব না।’’