চুরির পরে লন্ডভন্ড সেই ঘর। —নিজস্ব চিত্র
চুরি হয়ে দেল খাস মন্ত্রীর পাড়াতেই! বৃহস্পতিবার সকালে কাঠের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে চুরির ঘটনা ঘটেছে রাজ্যের পযর্টন মন্ত্রী গৌতম দেবে’র পাশের বাড়িতে। শিলিগুড়ি থানার কলেজপাড়ায় ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, বাড়ির দোতলায় চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে থাকেন। নিচতলায় ভাড়া থাকলেও কয়েকমাস তা ফাঁকা। বাড়িটি তাঁদের পৈতৃক বাড়ি। মস্তিস্কে ক্যান্সারে আক্রান্ত চন্দ্রশেখরবাবুকে নিয়ে গত রবিবার তাঁর পরিবার দিল্লিতে এইমসে চিকিৎসার জন্য গিয়েছেন। তার পর থেকে বাড়িটি ফাঁকা ছিল। এই সুযোগকেই দুষ্কৃতীরা কাজে লাগায়। বাড়ির প্রতিটি ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করা ছাড়াও আলমারির লকার ভাঙা হয়েছে। চন্দ্রশেখবাবুর আত্মীয়দের অনুমান, কিচু সোনার গয়না ও টাকা পয়সা দুষ্কৃতীরা সম্ভবত নিয়ে পালিয়েছে।
ঘটনার সময় তিনজন মহিলাকে ওই বাড়ি থেকে তিনটি বস্তা নিয়ে বার হতে দেখেন, স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা। তাঁরা তাড়া করলে দুটি বস্তা ফেলে মহিলারা পালিয়ে যায়। একটি বস্তা তারা নিয়ে গিয়েছে। উদ্ধার করা বস্তা দুটি থেকে বাসনপত্র, প্রসাধনী সামগ্রি উদ্ধার হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। ঘটনার কথা শুনেছেন মন্ত্রী গৌতমবাবু। তিনি বলেন, ‘‘ফাঁকা বাড়ির সুযোগ নিয়ে দুষ্কৃতীরা। পুলিশকে আরও নজরদারি বাড়াতে বলেছি।’’ দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানান পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা।
পুলিশ তদন্তের পর জানিয়েছে, দোতলা পুরানো বাড়টির সামনের অংশে, গেটে তালা রয়েছে। পিছনের দিকে ঘর থেকে কুয়োর দিকে যাওয়ার জন্য কাঠের পুরানো দরজা রয়েছে। সেটির নিচের অংশ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। দলটি দরজার তলাটা ভেঙে ভিতরে ঢুকেছিল। পরে ছিটকিনি খুলে দেওয়াল টপকে পালায়। চন্দ্রশেখরবাবু একটি চা সংস্থার কর্মরত ছিলেন। কয়েক বছর হলে অবসর নিয়েছেন। তাঁর ভাই সুমিত বন্দ্যোপাধ্যায় হাকিমপাড়ায় পরিবার নিয়ে নিজের ফ্ল্যাটে থাকেন। খবর পেয়ে তিনি কলেজপাড়ায় যান।
সুমিতবাবু জানান, দোতলার সব কটি ঘর লন্ডভন্ড ছিল। তাঁর কথায়, ‘‘দাদারা না থাকায় কী চুরি হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। তবুও কথা বলার পর তা বুঝেছি, সোনার গয়না ও টাকা পয়সা গিয়েছে।’’
এলাকার লোকজন জানান, মন্ত্রীর বাড়ির সামনের দিকে পুলিশ থাকায় দলটি পিছন দিয়ে ঢুকেছিল। ওই মহিলাদের কাগজ-কুড়ানির কাজ করেন বলে মনে হয়েছে। পুলিশের অ্যালবামের দেখানো ছবি থেকে ২-৩ জনকে চেনা গিয়েছে মনে হচ্ছে। দলটির সঙ্গে পুরুষও ছিল বলে মনে হচ্ছে। বর্ধমান রোড এলাকায় দলটা ঘোরাফেরা করে বলে পুলিশ অফিসারেরা জানিয়েছেন। তবে প্রথমে ১০০ ডায়ালে টেলিফোন করার অনেকক্ষণ পর পুলিশ আসে। দ্রুত আসলে হয়ত তল্লাশিতে সুবিধা হত।