—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সীমান্তের ও পারের কারখানার দূষণে ‘নাজেহাল’ এ পারের বসতি।
ভুটান সীমান্ত লাগোয়া জয়গাঁর খোকলাবস্তি ও সেন্ট্রাল ডুয়ার্স চা বাগান। ওই এলাকার পাশেই রয়েছে ভুটানের অন্যতম শিল্পাঞ্চল পাসাখা। সেখানে রয়েছে প্রায় ৪০টি কারখানা। অভিযোগ, সে সব থেকেই ক্রমাগত ছড়াচ্ছে বায়ু ও জলের দূষণ। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় সরব হয়েছেন বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যও। অভিযোগ, বায়ুদূষণের জেরে শ্বাসকষ্ট ও চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছেন সেন্ট্রাল ডুয়ার্স চা বাগান ও খোকলাবস্তির অনেক বাসিন্দা।
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত এক বছরে খোকলাবস্তিতে ৩২৬ জন জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত হয়েছেন। অভিযোগ, বায়ুদূষণের জেরেই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা হচ্ছে। পাসাখা শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন কারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়া কার্যত ‘বিষের’ মতোই বলে অভিযোগ ওই সব বসতির বাসিন্দাদের।
সেন্ট্রাল ডুয়ার্স এলাকায় প্রায় ২৫ হাজার মানুষের বসবাস। এলাকার বাসিন্দারা জানান, প্রায় সব বাড়িতেই দূষণের জেরে সাদা আস্তরণ পড়েছে। শ্বাসকষ্ট ও চর্মরোগে ভুগছেন এলাকার অধিকাংশ মানুষ। দূষণের জেরে চাষবাসেও সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ। ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
সেন্ট্রাল ডুয়ার্স এলাকায় পানীয় জলেরও সঙ্কট রয়েছে। এলাকায় সরকারি কোনও পানীয় জলের প্রকল্প তৈরি হয়নি। অনেক বাসিন্দা সিঙ্গিঝোরা নদীর জল পান করতেই বাধ্য হচ্ছেন। সেন্ট্রাল ডুয়ার্স চা বাগানের তরফে সিঙ্গিঝোরা নদী থেকে জল পাম্পের মাধ্যমে শ্রমিক মহল্লায় সরবরাহ করা হচ্ছে। অভিযোগ, সেই নদীতেও পাসাখার কারখানা থেকে বার হওয়া বর্জ্য মিশছে। অভিযোগ, তাতে জলবাহিত রোগও ছড়াচ্ছে। সরকারি হিসেবে, গত এক বছরে সেন্ট্রাল ডুয়ার্সের হাতিমারায় ১৩৫ জন আমাশায় আক্রান্ত হয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা তথা চুয়াপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত উপপ্রধান বিবেক রানা বলেন, ‘‘কয়েক দশক ধরে সেন্ট্রাল ডুয়ার্স ও খোকলাবস্তির বাসিন্দারা দূষণের শিকার হচ্ছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন দফতরে লিখিত ভাবে জানানো হলেও কোনও উদ্যোগ এখনও নেওয়া হয়নি।’’ রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পাসাখা শিল্পাঞ্চল থেকে ভুটান সীমান্তের ওই সব গ্রামে দূষণ ছড়াচ্ছে, এমন কোনও তথ্য এখনও আমার কাছে আসেনি। তেমন কিছু জানলে নিশ্চয়ই পদক্ষেপ করার চেষ্টা করব।’’
সেন্ট্রাল ডুয়ার্সের জলের সমস্যার বিষয়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের সহকারী বাস্তুকার বিক্রম বিশ্বাস বলেন, ‘‘সেন্ট্রাল ডুয়ার্স চা বাগানে রাঙামাটি-বাসরা ডিভিশনে এক মাসের মধ্যে সরকারি জল প্রকল্পের পরিষেবা পাবেন বাসিন্দারা। হাতিমারা-পানায় শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।’’