এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
নাবালিকা বিয়ের নিরিখে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম সারিতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা। এ বছরও জেলায় অপরিণত গর্ভধারণের হার কমার সম্ভাবনা প্রায় দেখা যাচ্ছে না বলেই দাবি। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে ২,৩০০ জন নাবালিকা অপরিণত গর্ভধারণ করেছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। জেলা প্রশাসন সূত্রে দাবি, অপরিণত গর্ভধারণের সংখ্যার চেয়ে ছাত্রীদের স্কুলছুটের হার প্রায় দ্বিগুণ। যদিও স্কুলছুট ছাত্রীর সংখ্যা শিক্ষা দফতরের কাছে নেই বলে দাবি আধিকারিকদের। অপরিণত গর্ভধারণ ঠেকাতে সব রকমের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তাঁরা।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ২০২২–২৩ এবং ২৩–২৪ অর্থবর্ষে অপরিণত গর্ভধারণের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে পাঁচ হাজার এবং সাড়ে পাঁচ হাজার। গ্রাম সংসদ স্তর থেকে জেলা স্তর পর্যন্ত শিশুসুরক্ষা কমিটি রয়েছে, কন্যাশ্রী প্রকল্পও চালু রয়েছে। নাবালিকাদের বিয়ে ঠেকাতে গত বছর একটি অভিযানও চালু করে জেলা প্রশাসন। তাতে অ্যাপের মাধ্যমে খবর আদান-প্রদানের ব্যবস্থা চালু রয়েছে। জেলা শিশুসুরক্ষা কমিটির চেয়ারপার্সন মন্দিরা রায় এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘প্রতি বছরই ছাত্রীদের স্কুলছুট হওয়া, নাবালিকার বিয়ে এবং অপরিণত গর্ভধারণের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। আমরা খবর পেলেই তা ঠেকাচ্ছি।’’
স্কুলছুট নাবালিকাদের মধ্যে অপরিণত গর্ভধারণের হার যে বাড়ছে, তা জাতীয় পরিবার এবং স্বাস্থ্য সমীক্ষার শেষ রিপোর্টেও বলা হয়েছে। কিন্তু এই জেলায় স্কুলছুট এবং অপরিণত গর্ভধারণ ঠেকানো যাচ্ছে না কেন? জেলা প্রশাসন সূত্রে দাবি, স্কুলছুটের সঙ্গে প্রায় সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে নাবালিকার বিয়ে এবং অপরিণত গর্ভধারণের। প্রশাসন সূত্রে দাবি, প্রতি বছর ১০ থেকে ১১ হাজার নাবালিকা জেলায় স্কুলছুট হয়। তার প্রায় ৬০ শতাংশ নাবালিকার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে এবং পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার নাবালিকার ক্ষেত্রে অপরিণত গর্ভধারণের বিষয় ঘটছে। এ বছর নভেম্বর থেকে শুরু করে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বিয়ের মরসুমে আরও বেশ কিছু নাবালিকার বিয়ে এবং আরও কিছু অপরিণত গর্ভধারণের আশঙ্কাও রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তা ঠেকাতে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন? জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক বিপ্লব সেন এবং জেলা শিশুসুরক্ষা আধিকারিক জয়িতা মুখোপাধ্যায়েরা অবশ্য বিষয়টি নিয়ে নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ দাস বলেন, ‘‘অপরিণত গর্ভধারণ ঠেকাতে আশাকর্মীদের দিয়ে এলাকায়-এলাকায় ‘কাউন্সেলিং’ চালানো হয়।’’ জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘সব স্তরে সচেতনতা এবং নজরদারির মাধ্যমে নাবালিকা বিয়ে, অপরিণত গর্ভধারণের হার কমানোর চেষ্টা চলছে। এগুলো পুরনো অভ্যাস। এক ধাক্কায় কমানো মুশকিল।’’