বালুরঘাট বিমানবন্দরে ঘন জঙ্গল। — নিজস্ব চিত্র।
১১ বছর কেটে গিয়েছে। বালুরঘাট বিমানবন্দরের পুনর্গঠনের কাজ এগোয়নি এতটুকু। বরং সময় যত এগিয়েছে, রানওয়ের পাশের জঙ্গলের পরিধি বেড়েছে। বড় হয়েছে ঘাসের আকার। বালুরঘাট বিমানবন্দরে বিমান চলাচল দূরের কথা, দিনের বেলাতেও লোকে ঢুকতে ভয় পান।
২০১২ সালে বালুরঘাট বিমানবন্দর পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়েছিল। রাজ্যের একাধিক নেতা, মন্ত্রী, বিধায়কের উপস্থিতিতে কাজ শুরু হয়েছিল। ব্যয় করা হয়েছিল কয়েক কোটি টাকা। উদ্দেশ্য ছিল, উন্নত পরিকাঠামোর মাধ্যমে বালুরঘাট বিমানবন্দরে দ্রুত বিমান চলাচল শুরু করানো।
বিমানবন্দরের জন্য মোট বরাদ্দ জমি ১৫২ একর। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথম দিকে কাজ কিছুটা এগিয়েছিল। দেড় কোটি টাকা খরচ করে দু’কিলোমিটার লম্বা নতুন রানওয়ে তৈরি হয়। বিমানবন্দর ঘিরে দেওয়াল ওঠে। বিমানবন্দরে তৈরি হয় অফিসঘর, যাত্রীদের বসার জায়গা। যাত্রীদের ব্যাগপত্রে তল্লাশির বিশেষ যন্ত্রও বসানো হয়েছিল। কিন্তু কাজ তার পর থেমে যায়।
১১ বছর পেরিয়ে গিয়েছে, এখনও বালুরঘাট বিমানবন্দর পড়ে আছে সেই তিমিরেই। কাজ এতটুকুও এগোয়নি। বিমানবন্দরের রানওয়ে বাদ দিয়ে বাকি এলাকা এখন ঘন জঙ্গলে পূর্ণ। বড় বড় গাছ উঠেছে রানওয়ের পাশে। বড় ঘাসে ঢেকেছে বাকি এলাকা। জঙ্গলের পরিচর্যা না হওয়ায় তা সাপ, বিষাক্ত পোকামাকড়ের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। তাই দিনের বেলাতেও অনেকে সেখানে ঢুকতে ভয় পান।
রাজ্যস্তর থেকে একাধিক বার বালুরঘাট বিমানবন্দর পরিদর্শনে এসেছেন আধিকারিকেরা। পরিবহণমন্ত্রীও ঘুরে গিয়েছেন। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বালুরঘাটে গিয়েছিলেন। কিন্তু কাজ শুরু করা যায়নি।
জেলাশসক বিজিন কৃষ্ণা সম্প্রতি বিমানবন্দর পুনর্গঠনের বিষয়ে নিজে উদ্যোগী হয়েছেন। রেল ইন্ডিয়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক সার্ভিস (আরআইটিইএস) এবং ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)-এর সঙ্গে জেলা কর্তৃপক্ষের আলোচনা হয়েছে। রাজ্য সরকারের উদ্যোগেই নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিমানবন্দরের কাজ আবার শুরু করার জন্য আবেদন এবং প্রস্তাব পাঠিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। উত্তরবঙ্গ পরিবহণের ক্ষেত্রে বালুরঘাট বিমানবন্দরের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একসময় এই বিমানবন্দর মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছিল। উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির সঙ্গেও এই বিমানবন্দরের মাধ্যমে দ্রুত এবং সহজে যোগাযোগ করা যায়।