হয়নি প্রকল্প, গরমের শুরুতেই কষ্ট রতুয়ায়

তিন বছর আগে পিএইচইর পানীয় জলের প্রকল্প তৈরি হয়েছিল। পরে তা চালুও হয়। সরযূ নদীর পাড়ের বাসিন্দারা ভেবেছিলেন এ বার এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা মিটবে। কিন্তু সপ্তাহ গড়াতেই মালদহের রতুয়ার ভাদো বটতলার পিএইচই প্রকল্প বন্ধ হওয়ার পর আর চালু না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন বাসিন্দারা। গরম পড়তেই এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জলস্তর নেমে যাওয়ায় নলকূপেও জল উঠছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৪৭
Share:

এমন অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে প্রকল্প। ছবি: বাপি মজুমদার।

তিন বছর আগে পিএইচইর পানীয় জলের প্রকল্প তৈরি হয়েছিল। পরে তা চালুও হয়। সরযূ নদীর পাড়ের বাসিন্দারা ভেবেছিলেন এ বার এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা মিটবে। কিন্তু সপ্তাহ গড়াতেই মালদহের রতুয়ার ভাদো বটতলার পিএইচই প্রকল্প বন্ধ হওয়ার পর আর চালু না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন বাসিন্দারা। গরম পড়তেই এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জলস্তর নেমে যাওয়ায় নলকূপেও জল উঠছে না। পাশাপাশি দীর্ঘদিনেও চালু না হওয়ায় প্রকল্পের চারপাশ আগাছার জঙ্গলে ভরে গিয়েছে। জলের রিজার্ভার, জল সরবরাহের পাইপলাইন, ট্যাপকল সহ পানীয় জল পরিশ্রুত করার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বেহাল হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ। দেড় কোটি টাকা খরচ করে তৈরি ওই প্রকল্পের বেহাল দশায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। তিন বছর ধরে সর্বস্তরে প্রকল্পটি চালু করতে দরবার করেও ফল না হওয়ায় এবার আন্দোলনে নামা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিছু যান্ত্রিক ত্রুটির জন্যই প্রকল্পটি চালু করা যায়নি বলে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের চাঁচলের সহকারি বাস্তুকার তরুব্রত রায় বলেন, ‘‘পাম্প থেকে জল তোলার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যার রয়েছে। পরীক্ষামূলক ভাবে প্রকল্পটি চালু করার সময় দেখা যায়, তাতে ঘোলা জল উঠছে। দ্রুত যাতে সমস্যা মেটে তা দেখা হচ্ছে।’’

রতুয়া-১ ব্লকের বিডিও নীলাঞ্জন তরফদার বলেন, ‘‘দফতরের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত যাতে সমস্যা মেটে তা দেখছি।’’

Advertisement

পিএইচই দফতর সূত্রে জানা যায়, এলাকার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে ভাদো বটতলা এলাকায় কয়েক বছর আগে পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্প গতে উদ্যোগী হয় সরকার। ২০১২ সালে প্রকল্পে তৈরি হওয়ার পর তা পরীক্ষামূকভাবে চালুও করা হয়। কিন্তু সপ্তাহখানেক বাদে তা বন্ধ হয়ে যায়।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট দীর্ঘ দিনের। পঞ্চায়েতের দেওয়া হাতেগোনা কয়েকটি নলকূপ রয়েছে। কিন্তু গরমে ওই নলকূপগুলি থেকে জল ওঠে না। তা ছাড়া জলেও প্রচন্ড লোহা থাকায় সারা বছর পেটের রোগে ভুগতে হয় বাসিন্দাদের। সে জন্য প্রকল্পে পৃথক ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টও রয়েছে। এলাকাটি নদীর ধারে হওয়ায় জলস্তরও অনেক নীচে। অগভীর নলকূপে জল ওঠে না বললেই চলে। কিন্তু খরচ বহূল হওয়ায় গভীর নলকূপ বসানোর সামর্থ্য নেই বাসিন্দাদের। তাই এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্প গড়ে তুলতে দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছিলেন বাসিন্দারা। প্রকল্পটি চালু হলে ভাদো ছাড়াও গনিপুকুর, লদাটোলা, বাজারপাড়া, চন্ডীপুর সহ কয়েকটি এলাকার ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ উপকৃত হবেন।

এলাকার বাসিন্দা মাসুদ আলম, শামিম আখতারদের অবশ্য অভিযোগ, ‘‘প্রশাসন ও দফতরের গাফিলতিতেই প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে। তিন বছরেও সমস্যা মিটবে না এমনটা হয় না। এবার আমাদের পথে নামতে হবে।’’ ভাদো পঞ্চায়েতের প্রধান নুরুল ইসলামও বলেন, ‘‘এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। প্রকল্পটি দ্রুত যাতে চালু হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরকে একাধিকবার বলেও ফল হয়নি।’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement