রাসের প্রস্তুতি মদনমোহন মন্দির চত্বরে। — নিজস্ব চিত্র
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা মেনে কোচবিহারে রাস উৎসবের অনুষ্ঠান আয়োজনে উদ্যোগী হয়েছে কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাষ্ট বোর্ড। ফি বছর কোচবিহার মদনমোহন মন্দির চত্বরে বিশেষ পুজো করে ওই উৎসবের সূচনা করেন দেবোত্তরের সভাপতি তথা জেলাশাসক। এবার কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের জন্য তিনি ওই পুজোর সূচনা করতে পারবেন কি না তা নিয়ে কর্মীদের একাংশের মধ্যে জল্পনা তৈরি হয়। নির্বাচন বিধি লাগু থাকায় ওই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে জেলা প্রশাসনের তরফে নির্বাচন কমিশনের কাছে পুরো বিষয়টি জানানো হয়। প্রশাসন সূত্রের খবর, কমিশনের তরফে সম্প্রতি ওই ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত এসেছে। উৎসবের ব্যাপারে কিছু নির্দেশিকা মানার কথাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে। এর মধ্যে রাস উৎসবের সূচনা অনুষ্ঠানে কোনও রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে অনুষ্ঠানের পুরো সময় ভিডিও রেকর্ডিং করার নির্দেশও রয়েছে। এই নির্দেশের জেরে এবার বোর্ডের সদস্য তথা প্রাক্তন সাংসদ প্রসেনজিৎ বর্মনকে আমন্ত্রণ করা হচ্ছে না।
দেবোত্তর কমিটি সূত্রে খবর, বংশানুক্রমিক ভাবে হরিণচওড়ার বাসিন্দা আলতাফ মিঁয়ার তৈরি রাসচক্র ঘুরিয়ে উৎসবের সূচনা হবে। জেলাশাসক বলেন, “কোনও সমস্যা হবে না। নির্বাচনের কাজ সেরে অনুষ্ঠানে যাব।’’ রাস উৎসবকে বর্ণময় করে তোলার প্রস্তুতি প্রায় সম্পূর্ণ। মদনমোহন মন্দির চত্বর সংস্কার, রং করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। নজরকাড়া আলোকসজ্জাও হয়েছে।
শনিবার পঞ্জিকার তিথি মেনে উত্থান একাদশীতে ছোট মদনমোহন বিগ্রহের ‘ঘুম’ ভাঙানো হয়। এক ট্রাস্ট কর্মী জয়ন্ত চক্রবর্তী জানিয়েছেন, রথের পর শয়ন একাদশীতে ওই বিগ্রহ শুইয়ে দেওয়া হয়। রাসযাত্রার আগে বিগ্রহ জাগিয়ে তোলা হয়। এ দিন নিয়ম মেনে সেটাই হয়েছে। ১৮১২ সালে ভেটাগুড়িতে মহারাজা হরেন্দ্র নারায়ণের আমলে রাসমেলার সূচনা হয়। ১৮৯০ সালে মদনমোহন মন্দির চালুর পর থেকে কোচবিহারে মেলা হচ্ছে। রাস পূর্ণিমার দিনে রাসচক্র ঘুরিয়ে উৎসবের দিনে মেলার উদ্বোধন করা হত। এবার উপনির্বাচনের জন্য উৎসব হলেও মেলা পিছিয়ে গিয়েছে। ২৩ নভেম্বর রাসমেলা শুরু হবে।