আতঙ্ক: চোখে মুখে ভয়। এখানেই পাওয়া গিয়েছে তরুণীর অগ্নিদদ্ধ দেহ। তা দেখতে গ্রামবাসীদের ভিড়ে রয়েছে ছোটরাও। নিজস্ব চিত্র
বালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করার পরে প্রায় একমাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়নি। এই পরিস্থিতিতে অভিযু্ক্তকে গ্রেফতার করার দাবিতে রায়গঞ্জের পুলিশকর্তার দ্বারস্থ হলেন নির্যাতিতার বাবা, মা।
সোমবার দুপুরে রায়গঞ্জের ভাতুন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা ওই দম্পতি রায়গঞ্জের বোগ্রাম এলাকায় রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপারের দফতরে যান। নির্যাতিতা মেয়েও তাঁদের সঙ্গে ছিল। পুলিশ সুপার সুমিত কুমার সরকারি কাজে বাইরে থাকায় তাঁরা রায়গঞ্জের ডিএসপি-র (ডিইবি) ঘরে গিয়ে তাঁর সঙ্গেদেখা করেন।
নির্যাতিতার বাবা, মায়ের সঙ্গে পুলিশের কাছে যান সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের নেতা ও সদস্যরাও। ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হওয়ার এক মাস পরেও কেন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হল না— ডিএসপির কাছে সেই প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। পাশাপাশি, তাঁরা দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার দাবি জানান।
ডিওয়াইএফের উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক কার্তিক দাসের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল দ্রুত অভিযুক্তের গ্রেফতারের দাবিতে ডিএসপির হাতে একটি স্মারকলিপিও তুলে দেন। তাঁরা জানান, ডিএসপি দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছেন।
এ দিন নির্যাতিতার বাবা, মা পুলিশকর্তার কাছে অভিযোগ করেন, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার জন্যই অভিযোগের ঘটনার একমাস পরেও অভিযুক্ত অধরা রয়েছে। তাঁদের আরও অভিযোগ, কয়েক দিন ধরে অভিযুক্তের প্রতিবেশি কয়েক জন তাঁদের অভিযুক্তের কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা নিয়ে ধর্ষণের মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন।
ডিএসপি (ডিইবি) প্রসাদ প্রধানের বলেন, ‘‘পুলিশের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’
নির্যাতিতার পরিজনদের অভিযোগ, অভিযুক্তের বাড়ি ভাতুন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। সাত বছরের ওই মেয়েটি নার্সারির পড়ুয়া। তার বাবার অভিযোগ, গত ২ ডিসেম্বর দুপুরে তাঁর মেয়ে বাড়ির সামনের রাস্তায় খেলছিল। সেই সময় বছর পঞ্চাশের অভিযুক্ত তাঁকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন।
নির্যাতিতার বাবার নালিশ, সে কথা জানাজানি হতেই এলাকার মাতব্বরেরা সালিশি বসিয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সামাজিক শাস্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু ঘটনার ছ’দিন পরেও অভিযুক্তকে সালিশি সভায় আনা হয়নি। এর পরেই ৮ ডিসেম্বর তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন।
মেয়েটির বাবার অভিযোগ, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার জন্যই এখনও পর্যন্ত অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়নি। তদন্তকারীরা তাঁর কাছেই অভিযুক্ত কোথায় রয়েছে তা চাইছেন। ধর্ষণের মামলা আদালতে প্রমাণের জন্য তাঁকে সাক্ষী জোগাড় করার পরামর্শও দিচ্ছেন।
নির্যাতিতা মেয়েটির বাবা বলেন, ‘‘কয়েকদিন ধরে অভিযুক্তের কয়েক জন প্রতিবেশি আমাদের ১ লক্ষ টাকা নিয়ে ধর্ষণের মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। স্থানীয় পুলিশের কাছ থেকে কোনও সাহায্য না পেয়ে অভিযুক্তের গ্রেফতারের দাবিতে বাধ্য হয়েই স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ডিএসপি-র কাছে এসেছি।’’
অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি অবশ্য আগেই দাবি করেছেন, তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।