স্নেহ: দিদির সঙ্গে অভিজিৎ। নিজস্ব চিত্র।
কলেজ পড়ুয়া দিদি কিডনির রোগে আক্রান্ত। এক দিকে দিদির চিকিৎসার খরচ সামলানো অন্য দিকে দুই ভাইবোনের পড়াশোনার খরচ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় ময়নাগুড়ি হাসপাতাল পাড়ার গুপ্ত পরিবারকে। ট্রেনে ফেরিওয়ালার কাজ করেন বরুণ গুপ্ত। আজ গর্বিত তার ছেলে অভিজিৎ গুপ্তের সাফল্যে। উচ্চমাধ্যমিকে অভিজিৎ ৪৮৮ নম্বর পেয়ে রাজ্য মেধা তালিকায় সপ্তম স্থান অর্জন করেছে ।
সোমবার উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশের সময়ে মা অঞ্জনা গুপ্তকে নিয়ে অভিজিৎ শিলিগুড়িতে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের অ্যাডভানস পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন। মঙ্গলবার সকালে অভিজিৎ ময়নাগুড়ি হাইস্কুলে গিয়ে তার মার্কশিট সংগ্রহ করে বলে জানান।
নিদারুণ অভাবের মধ্যেই বড় হতে হয়েছে বলে জানান এই কৃতী। মাধ্যমিকে ৬৪২ নম্বর পেয়েছিলেন অভিজিৎ।’’ এ বারে ভাল ফল হবে আশা ছিল। তবে সপ্তম হব তা ভাবিনি।’’ এই কৃতী বলেন, ‘‘বড় হয়ে আমি ডাক্তার হতে চাই। মেডিক্যালে পড়ার খুব ইচ্ছে। জানি না সেই ইচ্ছে পূরণ হবে কি না। দিদির অসুস্থতার বিষয়ের সঙ্গে গরিব মানুষের কাছে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া আমার লক্ষ্য।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমার বাবা ট্রেনে জিনিসপত্র ফেরি করে যে ভাবে আমাকে ও দিদিকে দেখাশোনা করছেন, সংসার চালাচ্ছেন, তাতে আমি গর্বিত বোধ করি।’’
অভিজিৎের বাবা মঙ্গলবারও বাড়িতে ফিরতে পারেননি। অসমের বিভিন্ন ট্রেনে ঘুরে ঘুরে ফেরি করছেন তিনি। বাবা বরুণ গুপ্ত জানান, ‘‘আমার ছেলের পড়াশোনার সব কৃতিত্ব ওর মায়ের। মায়ের ইচ্ছেতেই আজ এই সাফল্য।’’ দিদি টুইঙ্কল গুপ্ত বলেন, ‘‘ভাই সব সময়ই পড়াশোনার মধ্যেই থাকে।’’