নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলের চূড়ান্ত প্রার্থিতালিকা নাম ছিল বলেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও মেলেনি দলীয় প্রতীক। বাতিল হয়ে গিয়েছে মনোনয়নও। এমন অভিযোগ তুলে এ বার আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন জলপাইগুড়ির মালবাজার পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী রঞ্জনা দাস।
তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী প্রণীত এবং দলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘সিলমোহর’ দেওয়া চূড়ান্ত প্রার্থিতালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও পুরভোটে প্রার্থী হতে না পারার অভিযোগ তুলেছেন রঞ্জনা। বৃহস্পতিবার দলীয় প্রতীক না পাওয়ার পর আমরণ অনশনেও বসেছিলেন তিনি। রঞ্জনা বলেন, ‘‘আমাকে প্রার্থী করা হয়েছে বলেই মনোনয়ন জমা দিয়েছিলাম। মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে জেলা সভাপতির সঙ্গে কথাও হয়েছিল। কিন্তু দলীয় প্রতীক পেলাম না। আমাকে বাদ দিয়ে শেষমেশ প্রার্থী করা হল সরিতা গিরিকে।’’
গত শুক্রবার তৃণমূলের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজে যে প্রার্থিতালিকা প্রকাশিত হয়েছে (যা প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাকের তৈরি করা বলেই জানা গিয়েছে), ওই তালিকায় ১২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হিসেবে সরিতার নাম ছিল। কিন্তু পরে পার্থ-বক্সীর তৈরি যে তালিকা জেলা সভাপতিদের কাছে পাঠানো হয়েছে, ওই তালিকা অনুযায়ী রঞ্জনাকে প্রার্থী করা হয়। তা সত্ত্বেও জেলা নেতৃত্বের নির্দেশে সরিতার মনোনয়ন জমা দেওয়া এবং দলীয় প্রতীক পাওয়া নিয়েই ক্ষোভ প্রকাশ করেন রঞ্জনা।
আমরণ অনশনের সময় তাঁর সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন তৃণমূল নেতা তথা মালবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুশীলকুমার প্রসাদ। এর পরেই অনশন তুলে নেন রঞ্জনা। সুশীলকুমার বলেন, ‘‘দলের অন্দরে এমন ঝামেলা হলে কারও ভাল লাগে না। আমরা ওঁকে বোঝালাম। তাঁকে আশ্বস্ত করেছি, পুরবোর্ড গঠন হলে ওঁকে দল দায়িত্ব দেবে। সবাইকে সঙ্গে নিয়েই আমাদের এগোতে হবে।’’
রঞ্জনা অনশন তুলে নিলেও জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছেন। যা নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে জলপাইগুড়ির জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
গত সপ্তাহে শুক্রবার তৃণমূলের পুরভোটের প্রার্থিতালিকা প্রকাশের পর থেকে তা নিয়ে দলের বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। কারণ, আসলে প্রকাশিত হয়েছে দু’টি তালিকা। একটি, পার্থ-বক্সী প্রণীত তালিকা, যা জেলা সভাপতিদের কাছে পাঠানো হয়েছে শুক্রবার রাতে। অন্যটি শুক্রবার বিকেলেই প্রকাশিত হয় তৃণমূলের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজে। তবে দলনেত্রী মমতা পার্থ-বক্সীর তালিকাকেই ‘বৈধতা’ দিয়েছেন। ওই তালিকা মেনেই যে মনোনয়ন জমা দিতে হবে, তা নিয়েও স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু এর পরেও দলনেত্রীর নির্দেশ না মেনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারেই। মালবাজারের এই ঘটনা ওই তালিকায় নয়া সংযোজন।