বন্ধ চিলাপাতা রেঞ্জ। নিজস্ব চিত্র
বন সহায়ক নিয়োগ নিয়ে আন্দোলনের জেরে তিনদিন ধরে তালা রেঞ্জ অফিসে। যার জেরে শুধুমাত্র কার সাফারি বন্ধ হয়ে যাওয়াই নয়। বন্ধ হয়ে গেল এই সাফারির অনলাইন বুকিংও। ফলে চিলাপাতার জঙ্গল থেকে মুখ ফেরাতে শুরু করলেন পর্যটকেরাও। আর এতে রীতি মতো ক্ষুব্ধ চিলাপাতার পর্যটন ব্যবসায়ীরা। বনকর্তারা অবশ্য জানান, আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
অনেকদিন ধরেই বন সহায়ক পদে স্থানীয়দের নিয়োগের দাবি তুলছেন চিলাপাতা সংলগ্ন বিভিন্ন বনবস্তির বাসিন্দারা। সোমবার আচমকাই তাঁরা চিলাপাতা রেঞ্জ অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন। ওই সময় থেকেই চিলাপাতার জঙ্গলে কার সাফারি বন্ধ হয়ে যায়। উত্তর মেন্দাবাড়ি গ্রাম সভার সম্পাদক পবিত্র রাভা বলেন, “আমরা অনেকদিন ধরেই বন সহায়ক পদে স্থানীয়দের নিয়োগের দাবি জানাচ্ছি। তার পরেও বহিরাগতদের নিয়োগ করা হচ্ছে। এরই প্রতিবাদে চিলাপাতা রেঞ্জের অধীনে থাকা পাঁচটি গ্রাম সভা মিলে আমরা আন্দোলন করছি।”
কিন্তু বন দফতর সূত্রের খবর, টানা তিনদিন ধরে রেঞ্জ অফিসে তালা ঝুলে থাকায় ১২জানুয়ারী পর্যন্ত অনলাইনে কার সাফারির সমস্ত বুকিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগে থেকে যাঁরা কার সাফারির বুকিং করেছিলেন, তাঁদের বুকিং-ও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই এতে প্রতিদিনই হতাশ হয়ে পড়ছেন চিলাপাতা ঘুরতে আসা দূর-দূরান্তের পর্যটকেরা। ঘটনায় ক্ষুব্ধ পর্যটন ব্যবসায়ীরাও। চিলাপাতা ইকো ট্যুরিজ়ম সোসাইটির সভাপতি গণেশ শা-র অভিযোগ, “পর্যটকেরা আগে অনলাইনে কার সাফারি বুকিং করেন। তার পরে তাঁরা লজ, রিসোর্ট বা হোম-স্টে বুক করেন। কিন্তু কার সাফারি হচ্ছে না দেখে কোথাও বুকিং হচ্ছে না। ফলে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকেরই সমস্যা বাড়ছে। বন দফতর কেন তালা খুলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেনা, বুঝতে পারছি না।”
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও কুমার বিমলও বলেন, “কার সাফারি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পর্যটকরা সমস্যায় পড়ার পাশাপাশি চিলাপাতার বহু মানুষের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। তাই আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে তালা খোলার চেষ্টা চলছে।” বন দফতর সূত্রের খবর, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে পুলিশের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। তবে আন্দোলনকারীদের একাংশের অভিযোগ, তাঁরা আলোচনা চাইলেও, তাদের সঙ্গে বনকর্তারা বসছেন না। পুলিশের এক আধিকারিকও জানান, আন্দোলনকারীদের বোঝানোর চেষ্টা চলছে।