মঞ্চে রাজনাথ। নিজস্ব চিত্র।
ভারত ছাড়ো আন্দোলন থেকে নাট্যকার মন্মথ রায়ের উল্লেখ করে জেলাবাসীর আবেগ উস্কে দিলেন কেন্দ্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা রাজনাথ সিংহ। শুক্রবার বালুরঘাটে নির্বাচনী প্রচারে এসে রাজনাথ বলেন, "সরোজরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, নাট্যকার মন্মথ রায়ের এই ভূমিকে প্রণাম জানাই।"
বিয়াল্লিশের ভারত ছাড়ো আন্দোলনে জেলায় আন্দোলনকারীদের অন্যতম পুরোধা ছিলেন সরোজরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর নাম উল্লেখ করে স্বাধীনতা আন্দোলনের কথা ছুঁয়ে গিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। শুধু স্বাধীনতা আন্দোলন বা নাট্যব্যক্তিত্বের উল্লেখই নয়, রাজনাথের মুখে এ দিন বালুরঘাটের বুড়ি কালী, বোল্লাকালীর উল্লেখও রাজনৈতিক মহলে চর্চার বিষয় হয়েছে। রাজনাথ বলেন, "বালুরঘাট মা বুড়িকালী, বোল্লাকালীর পবিত্রভূমি। সরোজরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের স্বাধীনতা সংগ্রাম ভোলার নয়। এই ভূমি সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিক ভূমি।" দিল্লির এই নেতার মুখে বালুরঘাটের এই ইতিহাস কেন? পর্যবেক্ষকদের মতে, বালুরঘাট যে বরাবর স্বাধীনতা সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিল, সেই 'অহঙ্কার' জেলাবাসীর মধ্যে আজও অমলিন৷ বিয়াল্লিশের ভারত ছাড়ো আন্দোলনে বালুরঘাটের বাসিন্দা সরোজরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় কী ভাবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সেই ইতিহাস আজও বালুরঘাটের প্রবীণদের মুখে মুখে ফেরে। পাশাপাশি, নাটকের শহর বালুরঘাটে মন্মথ রায়ের আবেগ বালুরঘাটবাসীর 'শিরায় শিরায়' বইছে। পর্যবেক্ষকদের দাবি, বিধানসভা নির্বাচনে এলাকার এই অস্মিতাকে টেনে এনেই বাজিমাত করতে চাইছে বিজেপি। যদিও এ সব বলে বিজেপি মানুষের ভোট পাবে না, এমনটাই দাবি তৃণমূলের। তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌতম দাস বলেন, "মানুষ বিজেপির এই মিথ্যে আবেগের সুরসুরিতে ভুলবে না। বিজেপি যে গুণীজনদের সম্মান করে না তা বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙাতেই প্রমাণ মিলেছে। তাই যতই নাটকের কথা, আন্দোলনের কথা বলুক না কেন, বিজেপিকে কেউ ভোট দেবে না।" এ দিকে, রাজনাথের এই সভা নিয়ে ব্যাপক প্রচার করলেও জনসভায় ভিড় তেমন হয়নি। বিজেপি অবশ্য জানিয়েছে, যেহেতু একটা বিধানসভাকে কেন্দ্র করেই জনসভা করা হয়েছে, তাই অন্য বিধানসভা থেকে কর্মী-সমর্থক আনা হয়নি।