—ফাইল চিত্র।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে টানা বৃষ্টির পর এ বার উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে শুরু হয়েছে টানা বর্ষণ। সঙ্গে চলছে ঝোড়ো হাওয়া। ইতিমধ্যে ঝড়ের কারণে কোচবিহারের তুফানগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শিলিগুড়িতেও মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় বৃষ্টি। সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়া।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই পাহাড়-সহ সমতলে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও বেলার দিকে রোদের দেখা মেলে। কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে আবহাওয়া বদলাতে শুরু করে। রাত থেকে শুরু হয় ব্যাপক বৃষ্টি। শিলিগুড়ি শহর ও শহরতলি-সহ বিভিন্ন এলাকায় ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। জল বাড়ছে শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া মহনন্দা, ফুলেশ্বরী, জোড়াপানি নদীগুলোর। শহরের বেশ কিছু জায়গা ইতিমধ্যে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। পুরনিগমের একাধিক ওয়ার্ডে হাওয়ার দাপটে গাছ উপড়ে গিয়েছে। ১৫, ১৭ নম্বর ওয়ার্ড-সহ বিভিন্ন জায়গায় গাছ উপড়ে বিদ্যুতের তারে আটকে রয়েছে। বুধবার পুরনিগমের পক্ষ থেকে সেগুলো সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। তবে হতাহতের কোনও খবর নেই।
মঙ্গলবার গভীর রাতে হঠাৎ প্রবল ঝড়ে তছনছ তুফানগঞ্জ-১ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। কিছু ক্ষণের ঝড়ে কার্যত বিপর্যস্ত ১ নম্বর ব্লকের নাককাটিগাছ গ্রাম পঞ্চায়েত। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩০টিরও বেশি বাড়ি। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে, গাছ পড়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে তুফানগঞ্জ-বালাভূত রাজ্য সড়ক।
রাত ২টো নাগাদ তুফানগঞ্জের উপর দিয়ে ঝড় বয়ে যায়। সঙ্গে নামে মুষলধারে বৃষ্টি। একের পর এক বাড়ির উপর ভেঙে পড়ে বিদ্যুতের খুঁটি, বড় বড় গাছ। ঝোড়ো হাওয়ায় উড়ে যায় টিনের ছাউনি। নাককাটিগাছ এলাকার অনেকটা অংশ বিদ্যুৎহীন হয়ে রয়েছে। ঝড়ে রাত কাটলেও প্রশাসনের দেখা মেলেনি বলে গ্রামবাসীরা অভিযোগ করছেন। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ওই এলাকার এক বাসিন্দা শ্যামসুন্দর বসাক বলেন, ‘‘গতকাল রাত আনুমানিক ২টো নাগাদ প্রচণ্ড ঝড়ে গোটা এলাকা তছনছ হয়ে যায়। আমাদের শোয়ার ঘরের উপরে গাছ ভেঙে পড়ে। বরাতজোরে আমরা বেঁচে যাই। শোয়ার ঘরে গাছ ভেঙে পড়ায় বাকি রাত রান্নাঘরে কাটাতে হয়েছে। গোটা এলাকায় প্রায় একই রকম পরিস্থিতি।’’
এই বিষয়ে নাককাঠিগাছ গ্রাম পঞ্চায়েত এর প্রধান কোহিনুর খাতুন বলেন, ‘‘গতকাল রাতের ঝড়ে বহু বাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি, গাছ উপড়ে পড়েছে। সকাল থেকেই গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস থেকে সেই এলাকায় গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজন মতো এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করা হচ্ছে।’’