জবরদখল সরছে না, চিন্তায় রেল

নবান্নে অভিযোগ জানিয়েও রেল লাইনের আশপাশ থেকে জবর দখল সরানো যায়নি। ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা ক্রমশই বাড়ছে নিউ জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ি এলাকায়। সরাসরি এমনই অভিযোগ করলেন উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার বিভাগের ডিআরএম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:১২
Share:

নবান্নে অভিযোগ জানিয়েও রেল লাইনের আশপাশ থেকে জবর দখল সরানো যায়নি। ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা ক্রমশই বাড়ছে নিউ জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ি এলাকায়। সরাসরি এমনই অভিযোগ করলেন উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার বিভাগের ডিআরএম।

Advertisement

নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) জোনে জবরদখল নিয়ে রাজ্য সরকারকে এর আগে কড়া ভাষায় চিঠি লিখলেও উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের কর্তারা প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য বা অভিযোগ করেননি। রেল সূত্রের খবর, কোনও পদক্ষেপ না হওয়ায় ‘হতাশ’ রেল কর্তারা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে বাধ্য হচ্ছেন।

ঝাঁসিতে ট্রেন দুর্ঘটনায় শতাধিক যাত্রী মৃত্যুর পরে সারা দেশেই রেলের নিরাপত্তা নিয়ে সমীক্ষা চালাতে নির্দেশ দিয়েছে রেল মন্ত্রক। ডিআরএমদের নিজেদের এলাকার সব রেলপথ সরেজমিনে পরিদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে সেই পরিদর্শনের রিপোর্ট দিতে হবে। রবিবার কাটিহার থেকে শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন হয়ে নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) পর্যন্ত পরিদর্শন করেছেন ডিআরএম উমাশঙ্কর সিংহ যাদব। তৈরি হয়েছে প্রাথমিক রিপোর্ট। পরিদর্শনের পরে ডিআরএম কোনও রাখঢাক না করেই বলেন, ‘‘এনজেপি-শিলিগুড়িতেই জবরদখল সবচেয়ে বেশি। মাস দুয়েক আগে নবান্নে গিয়ে সব জানিয়েছি। তবু কোনও ফল হল না।’’

Advertisement

জবরদখলের জন্য দুর্ঘটনার সাক্ষী রয়েছে শিলিগুড়ি শহরই। ৯ সেপ্টেম্বর রাতে শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনের অদূরেই লাইন থেকে পড়ে যায় চেন্নাই এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন। ট্রেনের গতি অত্যন্ত কম থাকায় বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পান যাত্রীরা। রাতেই জোনের তাবড় রেল কর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন। তদন্তে জানা যায়, দু’পাশে জবরদখলের কারণে লাইনের নীচের মাটি ঝুরঝুরে হয়ে নরম হয়ে যাওয়া দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। রেল লাইন ছুঁয়েই নিত্য দোকান-বাজার বসে এলাকায়। রেল কর্তারা বিস্তারিত জানিয়ে জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনারকে এ নিয়ে চিঠি পাঠান। তাও পরিস্থিতি বদলায়নি। জবরদখল না সরায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন শিলিগুড়ির পরিবর্তে অন্য রুটে চালানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছে রেল। পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব জানিয়েছেন, রেল কর্তাদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘দখল সরানোর কথা বললেই হয় না। একটা প্রক্রিয়া রয়েছে। পুনর্বাসনের বিষয় রয়েছে। আমরা কী করতে পারি দেখছি।’’

ডিআরএমের কথায়, ‘‘আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। তাই রেলের কিছু করার নেই।’’ জবর দখলের কারণে বিকল্প লাইন তৈরি, এনজেপি এলাকার সৌন্দর্যায়ন, বাড়তি প্যাসেঞ্জার ট্রেন চালানো সবই আটকে আছে। রেলের অভিযোগ নিয়ে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘নবান্নে সব জানিয়েছি। নির্দেশ মতো ব্যবস্থা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement