রায়গঞ্জ ম্যাডিকেল কলেজ। — ফাইল চিত্র।
থাকার কথা সাত চিকিৎসক। কিন্তু, রয়েছেন মাত্র দু’জন। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে রায়গঞ্জ মেডিক্যালের এসএনসিইউ ইউনিটে এই পরিস্থিতি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগের মাঝেই সোমবার পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ওই ইউনিটে তিন শিশুর মৃত্যুকে ঘিরে মেডিক্যালের অন্দরে উদ্বেগ চরমে উঠেছে। রাজ্যে ইতিমধ্যেই শিশুদের একাংশে অ্যাডিনোভাইরাসে ছড়িয়েছে। যদিও মেডিক্যালে এখনও কোনও শিশু ওই রোগে আক্রান্ত হয়নি বলে কর্তৃপক্ষের দাবি।
মেডিক্যালের সুপার প্রিয়ঙ্কর রায় বলেন, “রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। আশা করছি, শীঘ্রই সমস্যা মিটবে।”
মেডিক্যাল সূত্রের খবর, ২০ শয্যার এসএনসিইউ ইউনিটে মূলত, ৪৫ দিন বয়স পর্যন্ত অসুস্থ সদ্যোজাত শিশুদের ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। প্রয়োজনে এক বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদেরও ভর্তি করা হয়। কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই ইউনিটের সাত চিকিৎসকের মধ্যে চার জন চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নত কোর্সে পঠনপাঠনের জন্য বাইরে রয়েছেন। এক জন মহিলা চিকিৎসক মাতৃত্বকালীন ছুটিতে। ফলে, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ওই দু’জন চিকিৎসক ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ওই ইউনিটে চিকিৎসাধীন শিশুদের পরিষেবা দিচ্ছেন।
মেডিক্যালের সহকারী সুপার অভীক মাইতি বলেন, “প্রশিক্ষিত চিকিৎসকেরাই এসএনসিইউ ইউনিটে পরিষেবা দেন। ফলে, সেখানে বেশ কিছু দিন চিকিৎসকের অভাব থাকলেও মেডিক্যালের অন্য চিকিৎসকদের দায়িত্ব দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।” ওই ইউনিটে চিকিৎসাধীন একাধিক শিশুর পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, চিকিৎসকের অভাবে পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। সবসময় ইউনিটে চিকিৎসক থাকেন না। কোনও শিশুর শারীরিক অবস্থার আচমকা অবনতি ঘটলে বা অনেক ক্ষেত্রে সঙ্কটজনক শিশু ভর্তি হওয়ার পরে দীর্ঘক্ষণ পর দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ওই ইউনিটে গিয়ে তাদের দেখছেন। ফলে, ওই ইউনিটে শিশু মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ।
রায়গঞ্জের পানিশালা এলাকার বাসিন্দা এক মহিলা বলেন, “শুক্রবার থেকে এসএনসিইউ ইউনিটে আমার এক আত্মীয়ের সদ্যোজাত মেয়ে ভর্তি রয়েছে। ইউনিটে দিনের বেশির ভাগ সময় চিকিৎসক থাকেন না। শিশুদের সুচিকিৎসার স্বার্থে দ্রুত ওই ইউনিটে পর্যাপ্ত চিকিৎসর নিয়োগ হওয়া দরকার।”