— প্রতীকী চিত্র।
কারও হাতে পাইপগান, কারও হাতে দেখা গিয়েছে সেভেন এমএমের মতো পিস্তলও। তাদের কেউ স্কুল ছাত্র, কেউ আবার পঞ্চায়েতের সচিব। তবে কি মালদহ জেলায় ‘সহজলভ্য’ হয়ে উঠেছে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র— হবিবপুরের বুলবুলচণ্ডী পঞ্চায়েতের সচিবের আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দাপাদাপির ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) প্রকাশ্যে আসায় সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
মঙ্গলবারও অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সচিব সুদীপ্ত সিংহকে পুলিশ ধরতে পারেনি। পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে সরব বিরোধীরা। যদিও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অস্ত্রআইনে মামলা করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত সচিবের বিরুদ্ধে ২৫/২৭ অস্ত্রআইন ও মারধরের মতো জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়েছে। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, “নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত চলছে।” অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সচিবের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করছে প্রশাসনও। হবিবপুরের বিডিও মনোজ কাঞ্জিলাল বলেন, “ব্লকের যুগ্ম আধিকারিককে তদন্ত করে দ্রুত রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বছর দুয়েক ধরে বুলবুলচণ্ডী পঞ্চায়েতের সচিব পদে রয়েছে ইংরেজবাজার শহরের বাসিন্দা সুদীপ্ত সিংহ। অভিযোগ, প্রেমঘটিত সম্পর্কে টানাপড়েনের জেরে দলবল নিয়ে এক যুবককে তিনি বেধড়ক মারধর করেন। এমনকি, আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে তার দাপিয়ে বেড়ানোর ভিডিয়োও প্রকাশ্যে আসে। পঞ্চায়েত সচিবের মতো সরকারি আধিকারিক কী ভাবে সেভেন এমএমের মতো পিস্তল পেল, সেই প্রশ্নও উঠেছে।
তবে শুধু বুলবুলচণ্ডীতেই নয়, আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দাপিয়ে বেড়ানোর অভিযোগ এর আগেও উঠেছে জেলায়। নভেম্বর মাসে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ‘রিল’ বানাতে গিয়ে দশম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। পুলিশ উদ্ধার করেছিল সেভেন এমএম পিস্তল। হরিশ্চন্দ্রপুর, মানিকচকেও পারিবারিক জমি বিবাদে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নিয়ে এলাকায় দাপানোর অভিযোগ রয়েছে। এই নিয়ে জেলায় রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে। বিজেপির উত্তর মালদহের সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত বলেন,“তৃণমূলের মদতে জেলায় দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য বাড়ছে। সে প্রশ্রয়ে পঞ্চায়েতের সচিবও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।” পাল্টা তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী বলেন, “বিরোধীরা সব কিছুতেই তৃণমূলের ছায়া দেখতে পায়। যে কোনও ঘটনাতেই পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে। বিরোধীরা রাজনীতি করছে।”