প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে গণপিটুনি রুখতে বিধানসভায় পাশ হয়েছে নতুন বিল। তারপরও হ্যামিল্টনগঞ্জের ঘটনায় পুলিশের ‘লঘু’ ধারা কেন? এ বার এই প্রশ্নই দানা বাঁধতে শুরু করল আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন মহলে।
গণপিটুনির একের পর এক ঘটনাকে ঘিরে জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই উত্তপ্ত হয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন এলাকা। গণপিটুনিতে গিয়েছে প্রাণও। এরই মধ্যে রবিবারের একটি ঘটনা এই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করে। পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার বিকেলে রাজলাল শা নামে ৩৫ বছরের এক যুবক হ্যামিল্টনগঞ্জের একটি মন্দিরের পুরোহিতের মেয়েকে বাড়ি থেকে জোর করে তুলে নিয়ে যেতে চায় বলে অভিযোগ ওঠে। পুলিশের খাতায় রাজলাল দুষ্কৃতী বলেই পরিচিত। বাড়ির মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় রাজলালকে বাধা দেন পুরোহিত ও তাঁর ভাই। অভিযোগ, সেই সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে পুরোহিত ও তাঁর ভাইকে আঘাত করে রাজলাল। আরও অভিযোগ, তখন আশপাশ থেকে বেশ কয়েকজন লোক ছুটে এসে রাজলালকে পেটাতে শুরু করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সেই সময় পাথর জাতীয় কোনও ভারী বস্তু দিয়ে কেউ পিছন দিক থেকে রাজলালের মাথায় আঘাত করে। তাতেই গুরুতর জখম হয় সে। পরে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে তার মৃত্যু হয়। জখম অবস্থায় আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে পুরোহিত ও তাঁর ভাইকেও ভর্তি করা হয়।
সোমবার হাসপাতাল থেকে ছাড়াও পাওয়ার পর পুরোহিতের ভাইকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, রাজলালের মৃত্যুর ঘটনায় অন্তত পাঁচজন জড়িত বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের। তবে ঘটনার সময় সেখানে আরও বেশ কয়েকজন ছিলেন বলেও পুলিশের আরেকটি সূত্রের খবর। তারপরও পুলিশ এই ঘটনায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করায় নানা মহলে প্রশ্ন দানা বাঁধতে শুরু করেছে।
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘মেয়েকে নিয়ে গোলমালের জেরে প্রথমে পুরোহিত ও তাঁর ভাইকে মৃত যুবক আক্রমণ করে। তারপর আত্মরক্ষায় পুরোহিত ও তাঁর ভাই সহ আরও দুই-তিনজন ওই যুবকের উপর আক্রমণ চালায়।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘মৃতের মাথার বাইরে শরীরের আর কোথাও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। তাই একে গণপিটুনির ঘটনা বলা যাবে না।’’ সেজন্যই এই ঘটনায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে বলে পুলিশের এক কর্তার দাবি। তবে অভিযুক্তদের প্রত্যেককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান ওই কর্তা।