নাকাল: যানবাহন কম। তাই হুড়োহুড়ি পরীক্ষার্থীদের। শিলিগুড়িতে শনিবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
প্রশাসনের দাবি প্রতিটি জেলায় বাড়তি বাস চালানো হয়েছে। আদপে চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ পরীক্ষার দিনের ছবিটা কিন্তু অন্য কথাই বলছে। বাসের ছাজে, ট্রেনের কামরার করিডরে, টেম্পোর মাথায়, চা বাগান থেকে ট্র্যাক্টরে চেপে পরীক্ষা দিতে হাজির হয়েছেন শয়ে শয়ে পরীক্ষার্থী।
উত্তরবঙ্গের সর্বত্র, তা সে মালদহ হোক বা বালুরঘাট, রায়গঞ্জ হোক বা, আলিপুরদুয়ার, শিলিগুড়ি হোক বা জলপাইগুড়ি— সব জায়গাতেই ছবিটা ছিল এমনই। অটো-টোটোয় ঠাঁই নেই অবস্থা। ছোট গাড়ির ছাদ প্রায় বোঝাই। এনবিএসটিসি-র তরফে দাবি করা হয়েছে, বাড়তি ১০০টি বাস চালানো হয়েছে। তাতেও কুলোয়নি। শিলিগুড়িতে লাগোয়া বিহার থেকে বহু পরীক্ষার্থীরা এসেছিলেন। তাঁদেরও একই সমস্যা হয়। যদিও জলপাইগুড়ির জেলাশাসক রচনা ভকত বলেন, ‘‘জলপাইগুড়িতে সুষ্ঠু ভাবেই সম্পন্ন হয়েছে পরীক্ষা৷ তেমন অভিযোগ নেই।’’
উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ, ইসলামপুরেও যানবাহনের সমস্যা হয়। নির্দিষ্ট সংখ্যক বাস না থাকায় পরীক্ষার পরে বাড়ি ফিরতে বেশ সমস্যায় পড়েন পরীক্ষার্থীরা। অনেককেই দেখা গিয়েছে বাস বা ট্রেকারের ছাদে বসে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বাড়ি ফিরেছেন। প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন, ইসলামপুর মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩২,৮০০। তবে এ দিন উপস্থিতির হার ছিল তার ৭৫ শতাংশ। ইসলামপুরের মহকুমাশাসক সেরিং ওয়াই ভুটিয়া বলেন, ‘‘সরকারি বাস ছাড়াও বাস ও ট্রেকার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে বেশি গাড়ি দেওয়া হয়েছিল।’’
উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, ইটাহার, করণদিঘি, ইসলামপুর, চোপড়া, গোয়ালপোখর-১ ও ২ ব্লকের স্কুল ও কলেজ মিলিয়ে ২১২টি পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রায় ৭৫ হাজার পরীক্ষার্থী গ্রুপ ডি চাকরির নিয়োগের পরীক্ষা দেন। দুপুর আড়াইটে থেকে বিকেল পৌনে চারটে পর্যন্ত পরীক্ষা হয়। বেশির ভাগ পরীক্ষার্থীর অন্য ব্লকে পরীক্ষার আসন পড়েছিল। এ দিন বেলা সাড়ে ১২টার মধ্যে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে রিপোর্টিং করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
পরীক্ষা কেন্দ্রে যাতায়াত করতে গিয়ে পরীক্ষার্থীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য জেলাজুড়ে সরকারি ও বেসরকারি পরিবহণ ব্যবস্থা স্বাভাবিক থাকবে বলে দাবি করেছিলেন উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক আয়েশা রানি। এমনকী, জেলা প্রশাসনের তরফে জেলার বেসরকারি পরিবহণ মালিকদের বিভিন্ন রুটে অন্যান দিনের তুলনায় অতিরিক্ত গাড়ি চালানোরও নির্দেশ দেন। তবু শনিবার পরীক্ষা দেওয়ার পর বিভিন্ন রুটে পর্যাপ্ত গাড়ির অভাবে বাড়ি ফিরতে গিয়ে হয়রানি ও দুর্ভোগ হল কেন? জেলাশাসকের অবশ্য দাবি, গাড়ির অভাবে পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের কোনও অভিযোগ প্রশাসনের জানা নেই।
তবে যে সব কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়েছে, সেখানকার কর্তব্যরত সরকারি আধিকারিকরা অনেকেই জানান, বাসের সমস্যার জন্য পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি হয়েছে। হেমতাবাদের মনু রায়, সমীর সাহা ও মনা সরকার বলেন, ‘‘পরীক্ষার শেষে হেমতাবাদে ফেরার পর্যাপ্ত বাস ও ট্রেকার ছিল না।’’ জেলা বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্লাবন প্রামাণিকের দাবি, ‘‘বিপুল সংখ্যক পরীক্ষার্থীর যাতায়াতের জন্য জেলায় পর্যাপ্ত গাড়ি নেই। পরীক্ষার্থীদের কিছুটা সমস্যা তো হবেই।’’
দহন দিনে
শিলিগুড়ি
• তাপমাত্রা: ৩২ ডিগ্রি
• আর্দ্রতা: ৭৭ শতাংশ
• রাতে বৃষ্টিতে গরম বেড়েছে
দার্জিলিং
• তাপমাত্রা: ২০ ডিগ্রি
• আর্দ্রতা: ৮৪
• হালকা বৃষ্টি
মালদহ
• তাপমাত্রা: ৪০ ডিগ্রি
• আর্দ্রতা: ৭০ শতাংশ
কোচবিহার
• তাপমাত্রা: ৩২ ডিগ্রি
• আর্দ্রতা: ৮৮ শতাংশ
• বৃষ্টি: ৯৬ মিমি
রায়গঞ্জ
• তাপমাত্রা: ৩০ ডিগ্রি
• আর্দ্রতা: ৭৫ শতাংশ
• বৃষ্টি হয়নি
জলপাইগুড়ি
• তাপমাত্রা: ৩১ডিগ্রি
• আর্দ্রতা: ৮১শতাংশ
• বৃষ্টি: ৩৭.৪ মিমি