আমরা কৈশোরে পুজোর সময় অপেক্ষা করে থাকতাম পুজোর সময় কী ক্যাসেট বার হবে। উফস। অন্তহীন অপেক্ষার পরে যখন পুজোর গানের অ্যলবাম বার হত, তখন তা শোনার জন উদগ্রীব হয়ে থাকতাম। পুজো মণ্ডপে দিনভর পুজোর ক্যাসেট বাজানো হত।
কিন্তু, এখন পুজোর গান ঘিরে তেমন উন্মাদনা চোখে পড়ে কই! হয়তো ইন্টারনেট, ইউটিভবের দৌলতে চাহিদা-যোগানের বিষয় অনেক পাল্টে গিয়েছে। তবুও পুজোর সময়ে নামী-দামী শিল্পীদের কণ্ঠে নতুন গান শোনার জন্য আজও মনপ্রাণ আনচান করে ওঠে। পুজোর সময়ে জামাকাপড় কেনা শুধু নয়, নতুন ক্যাসেট কেনার জন্যও সঙ্গীতপ্রেমীরা টাকা সরিয়ে রাখতেন। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, শ্যামল মিত্র, সুবীর সেন, কিশোর কুমার, মহম্মদ রফি, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, আরতি মুখোপাধ্যায়, নির্মলা মিশ্র, হৈমন্তী শুক্লা, প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কত পুজোর গান আজও মন ভরিয়ে দেয়। সব কিছুকে যেন ছাপিয়ে রয়েছেন লতা মঙ্গেশকর। আছেন আশা ভোঁসলেও।
এখন তো জীবনমুখী গানের জমানা। অনেক গান খুবই ভাল লাগেয়। আবার কিছু গানে প্রাণের ছোঁয়া পাই না। যান্ত্রিক মনে হয়। আচ্ছা, মান্না দের গাওয়া কফি হাউসে আড্ডাটা কিংবা সে আমার ছোট বোন কি জীবনমুখি গান নয়! আবার এখনকার গায়ক নচিকেতার ছেলে আমার মস্ত অফিসার….তাই আমার ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রম মানব জীবনের জলন্ত ছবি ফুটিয়ে তোলে।
সঙ্গীত তার ধারা নিয়ে নদীর মতো চলছে। অনেক নতুন স্রোত তাতে মিলছে। কিন্তু, অতীতের পুজোর সময়ে পুজোর গান নিয়ে যে উন্মাদনার ছবিটা দেখা যেত তা যে ফের কবে খুঁজে পাওয়া যাবে তা একমাত্র সময়ই বলবে।