আহত: ট্রেন ধাক্কা মারার পরে যন্ত্রণাকাতর হাতিটি। ফাইল চিত্র
ট্রেনের ধাক্কায় জখম বুনো হাতির মৃত্যুর পর ক্ষোভ ছড়াল ডুয়ার্সে।
রবিবার দফায় দফায় পরিবেশপ্রেমীদের আন্দোলন শুরু হয় ডুয়ার্স জুড়ে। নিউ মাল জংশনে পরিবেশপ্রেমী যৌথ মঞ্চের একাধিক সংগঠনের সদস্যেরা রেলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান। অন্যদিকে চালসা স্টেশনে মালবাজার ও চালসার পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের সদস্যেরা একত্রিত হয়ে বিক্ষোভে নামেন। প্রতিবাদের ঝড় ওঠে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। পুজোর শারদ শুভেচ্ছার বার্তা বিনিময়কে ছাপিয়ে ডুয়ার্স জুড়ে হাতি মৃত্যুর নিন্দা এবং সমবেদনার বার্তা ঘুরতে থাকে।
লাটাগুড়ির একটি পরিবেশপ্রেমী সংস্থার সম্পাদক অনির্বাণ মজুমদার, মালবাজারের একটি পরিবেশপ্রেমী সংস্থার কর্মকর্তা স্বরূপ মিত্রেরা অবিলম্বে হাতি মৃত্যু ঠেকাতে বন ও রেলের মধ্যে সমন্বয় দাবি করেন।
গত ১৪ মাসে মোট ৫টি হাতি ডুয়ার্স রুটে ট্রেনের ধাক্কায় মারা গিয়েছে। রেল চালকেরা হাতি দেখে ট্রেন দাঁড় করিয়ে দিয়ে সেই ভিডিও ভাইরাল করলেও বাস্তবে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু যে কোনও ভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না এই ঘটনা তারই প্রমাণ বলে পরিবেশপ্রেমীদের দাবি।
শুধু পরিবেশপ্রেমীরাই নন, এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ পর্যটন ব্যবসায়ীরাও। মূর্তি ধুপঝোরা এলাকার পর্যটন ব্যবসায়ী, রিসর্ট মালিক বাবলু মুখোপাধ্যায় বলেন, “সব কিছুর একটা শেষ থাকে। কিন্তু ডুয়ার্স রুটে রেলের ধাক্কায় হাতি মৃত্যুর কোনও শেষ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। কেন্দ্র এবং রাজ্যের যৌথ যোজনা না থাকলে তা সম্ভবও নয়।” হাতি করিডর নিয়ে কাজ করে চলা একটি পরিবেশপ্রেমী সংস্থার সম্পাদক শ্যামাপ্রসাদ পাণ্ডে বলেন, “কোনও অবস্থাতেই দিনের আলোতে ট্রেনের ধাক্কাতে হাতির মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না। কবে রেল ও বন সমন্বয় গড়ে কাজ করবে জানি না।”
রেলের তরফে অবশ্য পুরো ঘটনা অত্যন্ত আকস্মিকতার মধ্যেই ঘটেছে বলে দাবি করা হয়। রেলের আলিপুরদুয়ার বিভাগের ডিআরএম কে এস জৈন বলেন, “আমরা অত্যন্ত সতর্ক ভাবে এই রুটে ট্রেন চালাই, তারপরেও এই ঘটনা দুঃখজনক।”