শীতকালীন আনাজ বাজারে না আসা পর্যন্ত আনাজের দাম কমবে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। ফাইল চিত্র।
দুর্গাপুজোর আগে থেকেই উত্তর দিনাজপুরের বিভিন্ন বাজারে আনাজের দাম ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে। লক্ষ্মীপুজোর মুখে শুক্রবার জেলার নয়টি ব্লকের বিভিন্ন আনাজের দাম আকাশ ছোঁওয়া পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, পুজোর মুখে একটানা বৃষ্টির জেরে জেলাজুড়ে বিভিন্ন আনাজ চাষের ক্ষতি হয়েছে। ফলে সেই থেকে জেলায় আনাজের ঘাটতি চলছে। তাই যোগানের থেকে চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে পাইকারি বাজারে আনাজের দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরো বাজারেও আনাজের দাম বেড়ে গিয়েছে। শীতকালীন আনাজ বাজারে না আসা পর্যন্ত আনাজের দাম কমবে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
রায়গঞ্জের মোহনবাটী বাজারের আনাজ ব্যবসায়ী কমলেশ সাহার বক্তব্য, দুর্গাপুজোর আগে থেকে শুক্রবার পর্যন্ত খুচরো বাজারে বিভিন্ন আনাজ কেজিপ্রতি গড়ে ৮ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছে। পেঁয়াজ, রসুন, স্কোয়াশ ও ক্যাপসিকাম ছাড়া বাকি প্রায় সমস্ত আনাজ জেলার নয়টি ব্লকে চাষ হয়। চাষিরা সেই সব আনাজ সরাসরি বাজারে এনে পাইকারি ও খুচরো ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। কমলেশের কথায়, পুজোর আগে জেলায় টানা এক সপ্তাহ বৃষ্টি হয়েছে তার জেরে জেলায় বিভিন্ন আনাজ চাষের ক্ষতি হয়েছে। সেই থেকে জেলায় আনাজের ঘার্টতি চলছে। ফলে যোগানের থেকে চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে চাষিরা পাইকারি ও খুচরো ব্যবসায়ীদের কাছে বেশি দামে আনাজ বিক্রি করছেন। ফলে স্বাভাবিক ভাবে খুচরো বাজারেও আনাজের দাম বেড়ে গিয়েছে।
এদিন জেলার রায়গঞ্জ ও ইসলামপুর মহকুমার বিভিন্ন খুচরো বাজারে কেজিপ্রতি লঙ্কা ১১০, পটল ৮০, ঝিঙে ৬০, বরবটি ৮০, বেগুন ৮৫, ঢ্যাঁরস ৮০, বাঁধাকপি ৬০, কুমড়ো ৩০, শসা ৫০, মূলা ৫০, গাজর ১০০, টম্যাটো ৮০, আদা ১২০ ও পুঁইডাটা ৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়াও প্রতিপিস ফুলকপি ও লাউ ৩০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে।
বস্তুত, গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত জেলার নয়টি ব্লকে এক টানা বৃষ্টি হয়েছে।
কানকি বাজারের পাইকারি আনাজ ব্যবসায়ী বিমল বর্মণ বলেন, বৃষ্টি কমার পর গত ২ অক্টোবর থেকে চাষিরা জেলার নয়টি ব্লকের পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিভিন্ন আনাজ কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১৭ টাকা পর্যন্ত বেশি দামে বিক্রি করছেন। ফলে খুচরো বাজারে সেই সব আনাজের কেজিপ্রতি দাম গড়ে আরও তিন টাকা করে বেড়ে গিয়েছে।
হেমতাবাদের বাঙালবাড়ি এলাকার আনাজ চাষি মজিবর রহমানের দাবি, চারবিঘা জমিতে পটল ও দু’বিঘা জমিতে ঢ্যাঁড়স চাষ করেছিলেন। বৃষ্টিতে পটল ও ঢ্যাঁড়স নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমার মতো বহু চাষির আনাজ চাষ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাই আনাজের ঘাটতিকে কাজে লাগিয়ে লোকসান কমাতে চাষিরা ব্যবসায়ীদের কাছে বেশি দামে আনাজ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।’’