ধর্মধটের প্রস্তুতি।—নিজস্ব চিত্র।
সারা ভারত ধর্মঘটের সমর্থনে চা-বাগানে কাজ বন্ধ রেখে অবস্থান গেট মিটিংয়ে শামিল হলেন চা-শ্রমিকরা। ডুয়ার্সের গ্ৰেন্দ্রাপাড়া চা-বাগান, বানারহাট চা-বাগানে বুধবার সকালে গেট মিটিং করে জয়েন্ট ফোরাম। আগামী কালকের ধর্মঘট, চা-বাগানগুলোতে যাতে সর্বাত্মক হয় তার জন্য জোরদার প্রচার চালানো হয় জয়েন্ট ফোরামের পক্ষে।
এর আগে একাধিক ধর্মঘটে দেখা গিয়েছে, চা-বাগানে তার আংশিক প্রভাব পড়ে। তবে এ বারের ধর্মঘটে যাতে বাগানগুলোতে ১০০ শতাংশ প্রভাব পড়ে, তার জন্য মরিয়া জলপাইগুড়ি জেলার নেতারা। কারণ চা-শিল্পের সঙ্গে ডুয়ার্সের বড় অংশের মানুষ যুক্ত। গত লোকসভায় চা-বাগানগুলিতে ভাল ফল করেছিল বিজেপি। তাই চা-বাগানগুলোতে প্রভাব বিস্তারের পাশাপাশি হারানো জমি ফিরে পেতে মরিয়া বামেরা। এ দিন গ্যান্দ্রাপারা চা-বাগানে ভাষণ দেন, সিপিআইএম নেতা তথা চা-বাগান শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ জয়েন্ট ফোরামের আহ্বায়ক জিয়াউল আলম এবং বানারহাট চা-বাগানে গেট মিটিংয়ে বক্তব্য দেন অজয় মাহালি।
জলপাইগুড়ি জেলায় রয়েছে ৬৫টি চা-বাগান এবং আলিপুরদুয়ার জেলাতেও এক বড় অংশে চা বাগান রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ডাকা ধর্মঘটে বাগানগুলিতে কতটা প্রভাব পড়ে সে দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।
জিয়াউল আলম এ দিন বলেন, ‘‘দেশে খাদ্যসামগ্রীর দাম বেড়েই চলেছে। কোনও লাগাম নেই কেন্দ্রীয় সরকারের। এমনকি চা-শ্রমিকদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কোন সদর্থক ভূমিকা নেয়নি। চা-বাগান শ্রমিকদের একাধিক দাবি রয়েছে। চা-শ্রমিকরা এখনও জমির অধিকার পায়নি। তাদের পাট্টা দেওয়া হয়নি। ঘর সরকারি ভাবে ঘোষণা হলেও সেই ঘরের মালিক আদতে হয়ে থাকছেন বাগান কর্তৃপক্ষ। তাঁদের নিজস্ব বলে কিছু নেই। এমনকি তাদের মজুরি বৃদ্ধির দাবি দীর্ঘদিনের সেটাও এখনো পর্যন্ত পূর্ণ হয়নি। স্বাভাবিক ভাবে আগামী কালকের ধর্মঘটে চা-বাগানে ব্যাপক প্রভাব পড়বে।’’
চা-শ্রমিক উষা বিশ্বকর্মা, সুমত্রা মাহালিদের কথায়, ‘‘বহু দিন থেকে আমরা নানান সমস্যায় ভুগছি। আমাদের বাসস্থানের কোনও জমির পাট্টা নেই। যে মজুরিতে আমাদের কাজ করতে হয় তাতে সংসার চলে না। আগামী কালকের ধর্মঘটকে সমর্থন জানাচ্ছি।’’