অভিঘ্নের মৃত্যুতে শোকগ্রস্ত শহর

বুধবার রাতেই বালকের বাবা জগন্নাথ পুলিশে অভিযোগ জানান স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি নিয়ে। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০১:১৪
Share:

শোকস্তব্ধ: স্কুলের শৌচাগারের সামনে পড়ে গিয়ে মৃত ছাত্রের বাবা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

স্কুলের শৌচাগারের সামনে পড়ে গিয়ে প্রাক প্রাথমিকের এক ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষুব্ধ অভিভাবক এবং এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। বৃহস্পতিবার স্কুলের সামনে জড়ো হয়ে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। সন্ধ্যায় স্কুলের সামনে থেকে ঘটনার প্রতিবাদে মোমবাতি মিছিল হয় বিহারমোড় পর্যন্ত। মিছিলে ফেস্টুনে লেখা ‘ছয় বছরের ছোট্ট শিশু অভিঘ্ন গৌতমকে স্কুলের উদাসীনতায় হারালাম’। পরিস্থিতির জেরে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।

Advertisement

বুধবার রাতেই বালকের বাবা জগন্নাথ পুলিশে অভিযোগ জানান স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি নিয়ে। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়েছে। ওই দিন ছাত্রটির দেহ ময়নাতদন্তের পর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রাখা ছিল। এদিন সেখান থেকে দেহটি এনে শেষকৃত্য সম্পন্ন করে পরিবারের লোকেরা। বাড়ির পাশে মাঠে তাকে মাটি চাপা দেওয়া হয়।

ছাত্রের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা জেলা তৃণমূলের সভাপতি রঞ্জন সরকার। তিনি জানান, মৃতের পরিবারের তরফে পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছে। কোনও রকম প্রয়োজনে পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন।

Advertisement

ঘটনা জানতে পেরে জেলা প্রশাসনের তরফেও খোঁজ-খবর শুরু হয়েছে। মহকুমাশাসক সুমন্ত সহায় বলেন, ‘‘ব্লক প্রশাসনের কাছ থেকে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি দেখছি। মহকুমায় শিক্ষা বিভাগের কাজকর্ম যিনি দেখেন ওই আধিকারিককে বিস্তারিত জানাতে বলা হয়েছে।’’ তবে অভিভাবকদের তরফে কোনও অভিযোগ মেলেনি বলে জানান।

স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, বুধবার টিফিনের সময় পৌনে বারোটা নাগাদ ছাত্রটি শৌচাগারের সামনে থাকা কলে হাত ধুতে গিয়েছিল। সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গিয়েছে, শৌচাগারের উল্টো দিকে অনেকগুলো কল রয়েছে। করিডর দিয়ে গিয়ে সে কিছুটা এগিয়ে যায় শেষের দিকের কলগুলোর কাছে। কিন্তু সেখানে হাত না ধুয়ে পিছিয়ে আসে সামনের কলগুলোর দিকে। সে সময় অপর একটি ছাত্র দৌড়ে তার সামনে পৌঁছতেই আচমকা সামনে মুখ থুবড়ে পড়ে গোঁঙাতে থাকে। অপর ছাত্রটি তাকে তোলার জন্য ঝুঁকে বসে। সেখানে থাকা আয়া তা দেখে এগিয়ে গিয়ে অভিঘ্নকে উদ্ধার করে। স্কুলের অধ্যক্ষা সিস্টার শর্লি বলেন, ‘‘বিষয়টি দুর্ভাগ্যের। তবে স্কুলের তরফে সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’

স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, অভিঘ্নকে তখনই বাগডোগরা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার মা-বাবাকে ফোন করে জানানো হয়। বাগডোগরা হাসপাতাল থেকে রেফার করা হলে মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। বাবা জগন্নাথ সাড়ে ১২টা নাগাদ নার্সিংহোমে পৌঁছলে জানানো হয় ছেলে মারা গিয়েছে। পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে ঘটনার তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতিও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement