ফাইল চিত্র
জেলায় এমন কথা দলের অন্দরে অনেকেই বলেন। কিন্তু সেটা যে মিথ্যে নয়, এ বার রাজ্যের শীর্ষস্তরের বাঘা বাঘা নেতাদের চোখের সামনেই তার প্রমাণ দিলেন কোচবিহারের নেতারা! এক বৈঠকে থেকেও তাঁদের পরস্পরকে এড়িয়ে চলা এবং শীর্ষ নেতৃত্বের সামনে একে অপরের বিরোধিতার বিষয়টি ভাল ভাবে নিলেন না প্রশান্ত কিশোর (পিকে)। দলীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার কলকাতার বৈঠকে পিকে ছাড়াও ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সির মতো নেতারা। সকলের সামনে স্পষ্ট ভাবেই মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, বিধায়ক মিহির গোস্বামী থেকে জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়কে পিকে জানিয়ে দেন, দ্বন্দ্ব করলে হবে না। একসঙ্গেই চলতে হবে। পিকে-র সামনে সবাই শেষপর্যন্ত কথা দিয়ে এসেছেন, তাঁরা একসঙ্গেই চলবেন। দিনকয়েক ধরেই ব্লক ও জেলা কমিটি নিয়ে কোচবিহারে তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বিরোধ চূড়ান্ত আকার নিয়েছিল। দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, ওই বিরোধে একপক্ষে ছিলেন দলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম এবং দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ। অপরপক্ষে রবীন্দ্রনাথ-মিহির ছাড়াও আরও পাঁচ বিধায়ক বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, হিতেন বর্মণ, জগদীশ বসুনিয়া, ফজল করিম মিয়াঁ এবং অর্ঘ্যরায় প্রধান ছিলেন। দুই পক্ষই জেলা ও ব্লক কমিটিতে নিজেদের লোককে রাখার জন্য সওয়াল করেন। সেই বিরোধে ইতি টানতেই সবাইকে ডেকে পাঠানো হয় কলকাতায়। শুক্রবার তিন দফায় ওই বৈঠক হয়। সেখানেও জেলার নেতা-বিধায়কেরা বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। যা ভাল ভাবে নেননি পিকে। তিনি জানিয়ে দেন, এতে ফল ভাল হবে না। জেলার সবই তাঁর নজরে রয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পরেই টিম পিকের সমীক্ষার রিপোর্ট হাজির হয়। সেখানে জেলার ভোটারদের শতাংশের হার নিয়ে যেমন হিসেব ছিল, তেমন জেলার নেতারা কে কী করছেন, কার ভাবমূর্তি কী তারও উল্লেখ ছিল। ব্লক পর্য়ায়ের নেতাদের নাম ধরে ধরে কাকে কোথায় রাখলে সুবিধে হবে তা বুঝিয়ে দেন পিকে। অবশ্য তা অনেক নেতা-বিধায়কের পছন্দ হয়নি। তাঁরাও পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন সেখানেই। সেই সঙ্গেই পাঁচ জন নেতার নাম উঠে আসে যাদের দুর্নীতির ভুরি ভুরি অভিযোগ রয়েছে দলের অন্দরে। তাঁদের দলের কোনও দায়িত্ব দেওয়া হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন। সেখানে দিনহাটার দু’জন এবং কোচবিহার সদরের দু’জনের নাম রয়েছে।