কোনওমতে: নিজের অফিসেই পলিথিনের নীচে কাজ করছেন ডাকঘরের কর্মী। নিজস্ব চিত্র
নিজেদের ঘরের দখল নিতে বিএসএনএলের অফিসে ডাক কর্তৃপক্ষ তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাচক্রে, তার কদিনের মধ্যেই ডাক বিভাগের অফিসের অনেক ফোন একযোগে বিকল হয়ে গিয়েছে। গ্রাহকদের ইন্টারনেট পরিষেবার দেওয়ার জন্য বিএসএনএলের ‘লিজ লাইন’-ও আর ঠিকঠাক কাজ করছে না।
ডাক বিভাগের সন্দেহ, ঘরের দখল নিতেই পাল্টা চাপ দিতে লাইন অকেজো করে রাখা হচ্ছে। দুই কেন্দ্রীয় দফতরের এমন যুযুধান মনোভাবের রেশ পড়ছে পরিষেবায়।
দ্রুত সমস্যা মেটাতে দুই বিভাগের শীর্ষ কর্তাদের বৈঠকে বসার আর্জি জানিয়েছে ফেডারেশন অব চেম্বার কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, নর্থ বেঙ্গল (ফোসিন)। ফোসিনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘বিএসএনএল এবং ডাক কর্তৃপক্ষকে আলোচনায় বসে সমস্যা মেটাতে হবে। এ ভাবে বেশিদিন চললে গ্রাহক বিক্ষোভের আশঙ্কা রয়েছে।’’
সরকারি সূত্রের খবর, কোর্ট মোড়ের প্রধান ডাকঘর ভবনের পিছনের অংশের একতলা ও দোতলার সিংহভাগ জুড়ে প্রায় দু-দশক ধরে বিএসএনএলের অফিস চলছিল। প্রায় দেড় দশক আগে পাশের আশুতোষ মুখোপাধ্যায় রোডে বিএসএনএলের নতুন বিশাল ভবন তৈরি হয়। ইতিমধ্যে ডাক কর্তৃপক্ষ বিএসএনএল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেন, শহরের ৩৬টি ডাকঘরের শীর্ষ অফিস হওয়ার সুবাদে কাজের বহর বেড়েছে বলে বাড়তি জায়গাও লাগবে। প্রধান ডাকঘরে স্থায়ী গ্রাহক সংখ্যা লক্ষাধিক হয়ে গিয়েছে।
শিলিগুড়ির প্রধান ডাকঘরের মুখ্য পোস্টমাস্টার মণি ছেত্রী বলেন, ‘‘আমাদের নিজস্ব জায়গা থাকতেও পলিথিন টাঙিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পার্সেল রাখতে হচ্ছে। অফিসার-কর্মীদের গাদাগাদি করে কাজ করতে হচ্ছে। দ্রুত ঘরগুলি পাওয়া দরকার। সে জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।’’
কিন্তু, বিএসএনএল সূত্রের দাবি, এ ভাবে তালা ঝোলানোটা অসম্মানজনক। সূত্রটি জানিয়েছে, গত নভেম্বরের শেষে হঠাৎ অফিসে তালা ঝোলানোয় গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র, সরঞ্জাম অব্যবহৃত হয়ে পড়ে রয়েছে। বিএসএনএলের শিলিগুড়ির জেনারেল ম্যানেজার অরুময় ডাকুয়া বলেন, ‘‘দুটোই কেন্দ্রীয় সরকারি দফতর। এ ভাবে তালা ঝোলানো যায় নাকি।’’ তিনি দাবি করেন, ওই অফিসের ঘরে থাকা সরঞ্জাম, যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা যাচ্ছে না বলে ডাকঘরের কিছু ফোন লাইন অকেজো হয়ে থাকতে পারে। তিনি বলেন, ‘‘ঘর না খোলা হলে কোন লাইনে কীসের ত্রুটি সেটা কী ভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব?’’