মাটিতে ইঞ্চি পাঁচেক গেঁথে গিয়েছে লাইন। অথচ রেলের নজরদারিতে এতদিন ধরাই পড়েনি বলে অভিযোগ। গত শুক্রবার রাতে চেন্নাই এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনের সামনের দু’চাকা লাইন থেকে পড়ে যাওয়ার পরে, মাটিতে চাকা গেঁথে যাওয়ার বিষয়টি সামনে এসেছে। প্রশ্ন উঠেছে রেলের ভূমিকা নিয়েও। শিলিগুড়ি শহরের ব্যস্ত এলাকা মহাবীরস্থান উড়ালপুলের নীচ দিয়ে যাওয়া রেললাইন মাটির নীচের অনেকটাই ‘বসে’ গিয়েছে বলে রেলের তরফে জানানো হয়েছে।
রেলের দাবি, মহাবীরস্থান রেল গেটের কাছে লাইনের দু’পাশে জঞ্জালের স্তূপ জমে থাকা, রেল লাইনের দু’পাশে অবৈধ নির্মাণ, দোকান বসে যাওয়ায় রেল লাইনের তলা থেকে মাটি নরম হয়ে গিয়ে বিপত্তি উঠেছে। প্রকাশ্যে লাইনের পাশে দিনের পর দিন জঞ্জাল জমে থাকলেও, নিজেদের জমিতে অবৈধ দখল হয়ে চললেও কেন রেলের নজরে এতদিন তা এল না সেই প্রশ্ন উঠেছে। তবে চোখ বুজে ছিলেন রেলের নজরদাররা? চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে রেল প্রশাসনের অন্দরেও। পুরো বিষয়টি নিয়ে সদর থেকে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। আজ, সোমবার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী-আধিকারিকদের ডেকে পাঠানো হয়েছে নিউ জলপাইগুড়িতে রেলের প্রশাসনিক অফিসে।
যাত্রী নিরাপত্তার দিক থেকেও বিষয়টিকে চূড়ান্ত গাফিলতি হিসেবেই দেখা হচ্ছে। দুরপাল্লার ১০ জোড়া ট্রেন যাতায়াত করে এই লাইন দিয়ে। গত শুক্রবার রাতে যাত্রীঠাসা চেন্নাই এক্সপ্রেস অল্পের জন্য রক্ষা পায়। গতি অল্প থাকায় ইঞ্জিনের চাকা লাইনচ্যূত হওয়ার পরেই ব্রেক কষে ট্রেনটি থেমে যায়। না হলে সেই রাতে কী ঘটতে পারত, তা ভেবে শিউরে উঠেছেন রেল কর্তারাই। গভীর রাতেই কাটিহার থেকে পদস্থ কর্তারা চলে এসেছিলেন শিলিগুড়িতে। রাতের বেলাতেই ফিতে দিয়ে মাপজোক করে জানা যায় রেল লাইন মাটিতে অন্তত পাঁচ ইঞ্চি বসে গিয়েছে। শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন থেকে ঢিল ছোড়া দূরতে এমনকী ব্যস্ত একটি রেলগেটের পাশে যেখানে নজরদারি বেশি হওয়ার কথা সেখানে এই পরিস্থিতি কেন হল তা নিয়েও শুরু হয়েছে তদন্ত।
উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের নিউ জলপাইগুড়ির সিনিয়র এরিয়া ম্যানেজার পার্থসারথি শীল বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। অনেক কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কড়া পদক্ষেপও হবে।’’
তবে দিনের পর দিন সব কিছু সকলের চোখের সামনে থাকলেও এত দিন তা নিয়ে পদক্ষেপ হল না কেন, তার উত্তরই খোঁজার চেষ্টা করছেন রেলকর্তারা।