উন্নয়নে বরাদ্দ
English Bazar

উন্নয়নের অর্থ পড়ে

সরকারি তথ্য অনুুসারে, মালদহ জেলা পরিষদে কাজ না হওয়ায় পড়ে রয়েছে কোটি কোটি টাকা। ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে এ পর্যন্ত বরাদ্দের ৬৬ শতাংশ টাকা খরচ করতে পারেনি জেলা পরিষদ।

Advertisement

অভিজিৎ সাহা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:৩৩
Share:

ইংরেজবাজার পৌরসভা। —ফাইল চিত্র।

উঠে গিয়েছে পিচের আস্তারণ। সে রাস্তায় টোটো বা সাইকেলে ‘দুলতে-দুলতে’ পৌঁছতে হচ্ছে গন্তব্যে। মালদহ জেলা পরিষদ ভবন থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে রাস্তার এমনই ছবি ইংরেজবাজারের কাজিগ্রামের দ্বারবাসিনী গ্রামে। দ্বারবাসিনী মোড় থেকে মানিকপুর পর্যন্ত প্রায় দু’কিলোমিটার রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে উঠেছে।

Advertisement

গ্রামের টোটো চালক মিঠুন মণ্ডল বলেন, “রাস্তার কারণে টোটোয় যাত্রীরা বসে থাকতে পারে না। অনেক সময় টোটো উল্টেও যায়। আমরা চাই রাস্তার কাজ দ্রুত শুরু করা হোক।” কিন্তু মেরামত হচ্ছে না কেন? ইংরেজবাজারের পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ অর্পিতা দাস বলেন, “গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি থেকে বড় রাস্তা তৈরি করা সম্ভব নয়। রাস্তাটি তৈরির জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”

অথচ সরকারি তথ্য অনুুসারে, মালদহ জেলা পরিষদে কাজ না হওয়ায় পড়ে রয়েছে কোটি কোটি টাকা। ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে এ পর্যন্ত বরাদ্দের ৬৬ শতাংশ টাকা খরচ করতে পারেনি জেলা পরিষদ। আগামী তিন মাসের মধ্যে বরাদ্দের টাকা খরচ না হলে নতুন করে বরাদ্দ পেতে ‘হোঁচট’ খাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কাজের গতি ধীর গতিতে চলায় তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। যদিও প্রকল্পের কাজগুলি জোর কদমে চলছে বলে দাবি জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের। জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি এটিএম রফিকুল হোসেন বলেন, “দফতরে টাকা পড়ে আছে, সে কথা বলা ঠিক হবে না। অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ চলছে। আশা করছি, সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যাবে।”

Advertisement

পঞ্চায়েত দফতরের দাবি, ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে মালদহ জেলা পরিষদে ৬৮ কোটি ৩৬ লক্ষ ৭,১৬২ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। এর মধ্যে ২২ কোটি ৮৬ লক্ষ ১৮,২৬৮ টাকা খরচ হয়েছে। এখনও ৪৫ কোটি ৪৯ লক্ষ ৮৮,৮৯৪ টাকা পড়ে রয়েছে। শতাংশের হিসাবে জেলা পরিষদে ৩৩.৪৪ শতাংশ কাজ হয়েছে। মালদহের মতো জেলায় কোটি কোটি টাকা পড়ে থাকায় জেলা পরিষদের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। কারণ, এখনও জেলায় বহু গ্রামের রাস্তা বেহাল। নদীগুলির উপরে সেতু না থাকায় নড়বড়ে বাঁশের মাঁচা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে সাধারণ মানুষকে যাতায়াত করতে হচ্ছে। সম্প্রতি, হবিবপুরে খাটিয়া করে রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছনোর ভিডিয়ো সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ, সেখানে মাটির রাস্তা দিয়ে টোটো পর্যন্ত চলাচল করে না। জেলা পরিষদের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন জেলা পরিষদের বিরোধী দল নেতা কংগ্রেসের হান্নান শেখ। তিনি বলেন, “বিরোধীদের বক্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। মানুষের জন্য নয়, নিজেদের জন্য তৃণমূল নেতা-নেত্রীরা জেলা পরিষদ চালাচ্ছেন। কোটি কোটি টাকা পড়ে থাকলেও জেলার উন্নয়নে ব্যবহার হচ্ছে না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement