প্রতীকী ছবি।
কাছের মানুষের থেকে মানুষ মুখ ফেরাতে পারে, প্রভুভক্ত কুকুর নয়। কলেজপাড়ায় এক মহিলার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করতে গিয়ে এরকমই অভিজ্ঞতা হল পুলিশকর্মীদের। বর্ণালী ঘোষের দেহের কাছে ২ ঘণ্টা কাউকে ঘেঁসতে দেয়নি বুচি এবং উদু। ওই দুই কুকুর সামলাতে ডাকতে হল পশুপ্রেমী সংস্থার প্রতিনিধিদের।
দীর্ঘ দিন ধরে কুকুর পুষতেন বর্ণালী। তাঁর দেহ উদ্ধারের সময় দোতলার ঘরে আটকে ছিল দু’টি স্পিৎজ বুচি এবং উদু। প্রায় সাড়ে তিন বছর বয়েস সেদু’টির। পরিচারিকা দরজায় ঠেলা দিতেই কুকুরদুটি বেরিয়ে চলে আসে পাশের ঘরে, যেই ঘরের ফ্যান থেকে তখনও ঝুলছে মহিলার দেহ। তারপর পড়শি, পুলিশ প্রায় দু’ঘণ্টা চেষ্টা করেও পারেনি দেহের কাছে যেতে।
শেষে পুলিশ শিলিগুড়ির পশুপ্রেমী সংস্থার কর্ণধার শ্যামা চৌধুরীকে ডাকে। তিনি প্রায় আধ ঘণ্টার চেষ্টায় কুকুর দু’টিকে বাগে আনলে তবে দেহ নামাতে পারে পুলিশ। শ্যামাবাবুর কথায়, ‘‘মালিকের সঙ্গে এত একাত্মতা আমি আগে দেখিনি।’’
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের সন্দেহ, আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বর্ণালী। তবে প্রশ্ন উঠেছে বুচি আর উদু পাশে থাকলে তিনি কি সেটা করতে পারতেন? ঘটনার সময় কুকুরগুলোর পাশের ঘরে আটকে থাকার ঘটনায় বেড়েছে রহস্য। অনেকেই মনে করছেন, কুকুর দু’টি ছাড়া থাকলে একাজ করতে হাজারবার ভাবতে হত বর্ণালীকে। পশু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কুকুর এসব আগে থেকেই বুঝতে পারে। তারা চিৎকার করে হয়তো প্রতিবেশীকে সচেতন করে ফেলতে পারত। তাই কুকুরগুলোকে আটকে রাখা ছিল পাশের ঘরে? এরকম অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
সোমবারের ঘটনার পর আপাতত ওই বাড়ির পরিচারিকা মিনু চৌধুরীর বাড়িতে স্থান পেয়েছে দু’টি স্পিৎজ বুচি ও উদু। পশুপ্রেমী সংস্থার কর্ণধার শ্যামা জানিয়েছেন, তাঁরা ওই স্পিৎজদু’টির পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিতে চান।