নতুন করে জানি ময়নাগুড়ি হঠাৎ কলোনিতে আর গোলমাল না হয় তার জন্য এলাকায় পুলিশ টহল। ছবি দীপঙ্কর ঘটক।
কেউ বলছেন, ‘‘রাতে তাড়াতাড়ি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম’’। কেউ আবার জানাচ্ছেন, ঘরে জোরে টিভি চলায় বাইরের আওয়াজ কিছুই শুনতে পাননি তাঁরা। তাই বুধবার রাতে ময়নাগুড়ির হঠাৎ কলোনির বাসিন্দা কংগ্রেস কর্মী মানিক রায়কে কখন ডেকে নিয়ে গেল ‘দুষ্কৃতীরা’, কখনই বা গাছে বেঁধে গণপিটুনি দেওয়া হল তা জানেন না বলে দাবি পড়শিদের। বৃহস্পতিবার সকালে খবর ছড়িয়ে পড়তেই সুনসান হয়ে যায় রাস্তা। শুক্রবারেও একই পরিস্থিতি!
পুলিশ সূত্রের দাবি, বৃহস্পতিবার বিকেলে মানিকের দেহ গ্রামে পৌঁছলেও দাহ করার মতো লোকজন পাওয়া যাচ্ছিল না। উপায় না দেখে ময়নাগুড়ি থানার আইসি সুবল ঘোষ স্থানীয় কয়েক জনের সাথে যোগাযোগ করেন। চার-পাঁচ জন গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ মৃত কংগ্রেস কর্মীর দেহ দাহ করে। আইসি সুবল ঘোষ বলেন, ‘‘কিছু কাজ মানবিকতার স্বার্থে করতে হয়। সেই সময় আমরা কাউকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। এই কারণে আমাদেরকে উদ্যোগী হতে হয়েছে।’’
এ দিন পুলিশের গাড়ি এলাকায় ঢুকলেই জানালার ফাঁক দিয়ে নজর রাখছেন গ্রামবাসীরা। অনেকেরই আশঙ্কা, গণপিটুনির ঘটনায় গ্রেফতার হতে পারেন যে-কেউ। এক গ্রামবাসীর কথায়, ‘‘কিছু মানুষের জন্য গোটা গ্রাম এখন আতঙ্কে রয়েছে। দিনভর পুলিশের গাড়ি হন্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে গ্রামের রাস্তায়। সাদা পোশাকের পুলিশ কর্মীরাও নজর রাখছে ওই এলাকায়।’’ আর এক গ্রামবাসী জানিয়েছেন, মানিক গ্রামের অনেকের সঙ্গেই বিবাদে জড়িয়েছিলেন বিভিন্ন সময়। দৃষ্টিশক্তির সমস্যা থাকায় তিনি মনে করতেন, তাঁকে দেখে সবাই ব্যঙ্গ করে। ওই গ্রামবাসীর দাবি, ‘‘রাস্তাঘাটে চলাচলের সময়ে কেউ যদি অন্য কারণে হাসাহাসি করত, ও ধরে নিত, ওকে দেখে হাসছে। বিভিন্ন সময়ে ছোট-বড় কারণে সকলের সঙ্গেই বিবাদ লেগে থাকত। তাই বলে এ ভাবে
হত্যা, মেনে নেওয়া যায় না।’’ তবে মানিকের স্ত্রী স্বপ্না রায়ের দাবি, ‘‘শারীরিক কারণে নয়। অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদ করতেন আমার স্বামী। তাতেই ঝামেলা।’’